আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
প্রিয় দর্শক ,,
আখেরী যামানায় কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে মিথ্যুক দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটবে। দাজ্জালের আগমণ কিয়ামত নিকটবর্তী হওয়ার সবচেয়ে বড় আলামত। মানব জাতির জন্যে দাজ্জালের চেয়ে অধিক বড় বিপদ আর নেই। বিশেষ করে সে সময় যে সমস্ত মুমিন জীবিত থাকবে তাদের জন্য ঈমান নিয়ে টিকে থাকা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে। সমস্ত নবীই আপন উম্মাতকে দাজ্জালের ভয় দেখিয়েছেন। আমাদের নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও দাজ্জালের ফিতনা থেকে সতর্ক করেছেন এবং তার অনিষ্ট থেকে বাঁচার উপায়ও বলে দিয়েছেন। ইবনে উমার (রাঃ) নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হতে বর্ণনা করেনঃ “একদা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাড়িয়ে আল্লাহর যথাযোগ্য প্রশংসা করলেন। অতঃপর দাজ্জালের আলোচনা করতে গিয়ে বললেনঃ আমি তোমাদেরকে তার ফিতনা থেকে সাবধান করছি। সকল নবীই তাদের উম্মাতকে দাজ্জালের ভয় দেখিয়েছেন। কিন্তু আমি তোমাদের কাছে দাজ্জালের একটি পরিচয়ের কথা বলব যা কোন নবীই তাঁর উম্মাতকে বলেন নাই। তা হলো দাজ্জাল অন্ধ হবে। আর আমাদের মহান আল্লাহ অন্ধ নন।
দাজ্জালের অধিকাংশ অনুসারীই হবে নারী,কিন্তু কেন?
দাজ্জাল থেকে মেয়েরা এতটা প্রভাবিত কেন বা কিভাবে হবে যে পুরুষরা বাধ্য হয়ে তাদের বেঁধে রাখবে? স্পষ্টত ভাবে একটাই কারন তা হলো, তাদের ব্রেইন ওয়াস করা হবে, নারীদের মগজ সম্পূর্ণ ধোলাই হয়ে গেছে তাই আমরা তাদের যতই বুঝবো তারা বুঝবেই না। রমরমা মেডিয়া, ফ্যাশন, শিক্ষা আর সর্বপরি নারী স্বাধীনতার আন্দোলন তাদের মগজ ধোলাই করে দিয়েছে। তাদের মাথায় ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছে চল আইডল, ডান্স এইগুলোতে অংশগ্রহণ করি, হিজাব বাদ দেই, আবেদনময়ী হয়ে ওঠি ইত্যাদি। এই আধুনিক পশ্চিমা নারীবাদী আন্দোলন ১০০ বছর ধরে নারীদের মগজ ধোলাই করে যাচ্ছে, মেয়েদের সাধারণ চিন্তা করার ক্ষমতাকেও কেড়ে নিয়েছে। আমরা পূর্বেই বলেছি যে দাজ্জালই হল এই আধুনিক পশ্চিমা সভ্যতার (মাস্টার মাইন্ড) পরিকল্পনাকারী।
দাজ্জালের অন্যতম কাজ হল আল্লাহর দেওয়া সমস্ত বিধানকে পরিবর্তন করে ফেলা। সমস্ত হারামকে হালাল ও সমস্ত হালালকে হারাম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। ইসলাম যে সত্য নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে তাকে চ্যালেঞ্জ করা ও তার বিপরীত ভাবাদর্শ তৈরি করা। এভাবে সে সমস্ত মানবজাতির ধর্মীয় বিশ্বাসকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে। আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখা হবে দুঃসাধ্য ব্যাপার।
নারীবাদী আন্দোলন দাজ্জালের অন্যতম ভাবাদর্শ। নারীবাদী আন্দোলনে বলা হয় নারী ও পুরুষ একে অপরের সমান। ইসলামের মতে নারী ও পুরুষ একে অপরের সমানও নয় বা কেউ কারোর চেয়ে উত্তমও নয়। তারা একে অপরের পরিপূরক, অনেকটা একই মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠের মত। সূরা লাইলের ১ থেকে ৪ নং আয়াতে আল্লাহ কি বলেন দেখুন -
১। শপথ রাত্রির, যখন সে আচ্ছন্ন করে, ২। শপথ দিনের, যখন সে আলোকিত হয়
৩। এবং তাঁর, যিনি নর ও নারী সৃষ্টি করেছেন, ৪। নিশ্চয় তোমাদের কর্ম প্রচেষ্টা বিভিন্ন ধরনের।
মহান আল্লাহ নারী ও পুরুষের বর্ণনা দিতে গিয়ে রাত ও দিনের সপথ নিয়েছেন। রাত ও দিন যেমন কার্যগতভাবে ভিন্ন, একে অপরের সমান নয় বা উত্তম নয় তেমনি নারী ও পুরুষ কার্যগতভাবে ভিন্ন, একে অপরের সমান নয় বা উত্তম নয়। সমস্ত মানুষ কেয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে চিরুনির দাঁতের মত সমানভাবে দাঁড়াবে। শ্রেষ্ঠত্বের ভিত্তি হল তাকওয়া বা ধার্মিকতা, গায়ের রং বা লিঙ্গ নয়।
এই নারীবাদী ইডিওলজির উপর ভিত্তি করে এখন পৃথিবীতে একটি সেক্সুয়াল রেভলুশন চলছে। নারী পুরুষের মত হওয়ার চেষ্টা করছে এবং পুরুষ নারীর মত হওয়ার চেষ্টা করছে। আর এভাবেই আখেরী জামানা সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সঃ এর ভবিষৎবাণী সত্য প্রমাণিত হয়ে গেছে। তিনি (সঃ) বলেছেন, “পুরুষ নারীর পোশাক পরবে ও নারী পুরুষের পোশাক পরবে” (বুখারি)। তিনি (সঃ) বলেছেন, “নারীরা পোশাক পরেও উলঙ্গ থাকবে” (আবু দাউদ)। “দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচানোর জন্য পুরুষেরা তাদের স্ত্রী, মা, বোন, কন্যা, ফুফু এবং অন্যান্য স্বজন মহিলাদেরকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখবে” (আহমাদ)। এগুলো ইতোমধ্যে হয়ে গেছে এবং এগুলো নারীবাদী আন্দোলনের ফসল যা দাজ্জালের কাছ থেকে এসেছে। ব্যাপকহারে বিবাহবিচ্ছেদ, সমকামিতা, উভকামিতা, লিঙ্গ পরিবর্তনসহ আরো অনেক অশুভ বিষয়ের জন্ম দিচ্ছে দাজ্জালের এই নারীবাদী আন্দোলন। সোসাইটি ভেঙ্গে যাচ্ছে, মানবজাতি এগিয়ে যাচ্ছে অজানা ধ্বংসের পথে।
মাশাআল্লাহ আমাদের অনেক বোনদেরকে দাজ্জাল এখনো প্রভাবিত করতে পারেনি, তারা নিজের হিজাব কে বর্জন করেনি আর ইনশাআল্লাহ্ করবেও না।
0 Comments