আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।

প্রিয় দর্শক ,,

সময়টা খারাপ যাচ্ছে মা আমিনার।  স্বামীকে হারানোর ধাক্কা এখনো ঠিক সামলে উঠতে পারেননি, এরইমধ্যে পেটে সন্তান । আমিনা শুনেছিলেন গর্ভধারণ খুব একটি ভয়ের এর কথা।  এই সময়ে মেয়েদের কত ধরনের সমস্যা যে হয় ,,তার কি কোন ঠিক আছে?? দিন যায়,, মাস যায় আমিনা অবাক হতে লাগে,,                        

গর্ভধারণ এত সহজ!!!! কতকিছুই তো শুনেছিলাম ।  পেটে বাচ্চা আসলে এই হয় ,,সেই হয়্  কই কিছুই তো হল না । বাচ্চা জন্ম দেয়া এত সহজ !!                                                                                                              

আব্দুল মোতালেবের মন খারাপ । কিছু দিন আগেই আদরের ছেলে আব্দুল্লাহক হারিয়েছেন।  আব্রাহার বাহিনী কাবা ঘরে হামলা করেছেন।  সময় খারাপ হলে বুঝি এমনই হয় । ক্যালেন্ডারের পাতায় 570 খ্রীষ্টাব্দে বারই রবিউল আউয়াল । বসন্তের সকাল ,,আমিনার কোল আলো করে জন্ম নিল ফুটফুটে এক শিশু। মা আমিনার চোখে কি জল এসেছিল?? আমরা জানিনা ।মা আমিনা কি মুচকি হেসেছিলেন?? আমরা তাও জানিনা।  হেসেছিলেন আরো একজন,, দাদা আবদুল মুত্তালিব পুত্র আব্দুল্লাহর শোককে দাদা ভুললেন আদরের নাতিকে পেয়ে।  কোলে তুলে নিলেন নাতিকে।  কোল  থেকে আর নামাতেই চাননা আব্দুল মোতালেব।                        

কি এক মনে চেয়েছিলেন ওই ছোট্ট এতোটুকু মুখের দিকে।  ওই চাঁদ মুখে কি বারবার খুঁজে ফিরছিলেন তার আদরের ছেলে  আব্দুল্লাহর ছায়া?? আমরা জানিনা ,,কিছুই জানিনা ।                                                     

                                                                                                                                                              

পিতামহ আব্দুল মুত্তালিব এর সবচেয়ে প্রিয় জায়গা ছিল কাবাঘর।  ওখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে তিনি ইবাদত করতেন । এবারও নাতিকে কোলে নিয়ে সোজা কাবা ঘরে চলে গেলেন দাদা । দাদার কোলে চরেই নাতি প্রথম বারের মতো প্রবেশ করলেন কাবাঘরে।  দাদা কি জানতেন ??এই কাবাঘরই হবে তার ছোট্ট দাদুভাইয়ের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান।  দাদা কি জানতেন ?? তার এই পিচ্চি নাতিই একদিন লিখবে এই কাবার হাজারো বছর পুরনো ইতিহাস?/ এই কোলের বাচ্চাটাই একদিন হবে পিতা ইব্রাহিমের উম্মতে মুহাম্মাদির কান্ডারী রাহমাতুল্লিল আলামিন । নাতিকে কোলে নিয়ে আব্দুল মোত্তালেব নাম রাখার জন্য দোয়া করতে শুরু করলেন । অদৃশ্য থেকে আওয়াজ এলো তোমার নাতির নাম রাখো “মুহাম্মাদ” ।                                       

 

 আব্দুল মোত্তালিব তার দাদু ভাইয়ের নাম রাখলেন মোহাম্মদ।  মোহাম্মদ নামটা ছিল একেবারে আনকমন একটি নাম।  আরবে সাধারণত যেমন নাম রাখা হতো এই নামটা এমন ছিলনা । মোহাম্মদ শব্দের অর্থ প্রশংসনীয় । আব্দুল মোত্তালিবকে লোকজন জিজ্ঞেস করত,, আচ্ছা মোত্তালিব !!!নাতির এমন অদ্ভুত নাম কেন রাখলে?? আব্দুল মোত্তালিব উত্তর দিতেন আমি চাই আমার দাদুভাই পৃথিবী এবং স্বর্গ দুই জায়গাতেই প্রশংসা পাক।  এজন্যই আমি আমার দাদু ভাইয়ের নাম দিলাম  মোহাম্মদ ।  আব্দুল মোত্তালিব কি কল্পনা করতে পেরেছিলেন এই প্রশংসা কতটা প্রশংসা ??/আব্দুল মোত্তালিব কি কখনো ভেবেছিলেন সারা পৃথিবীর 200 কোটি মানুষ দৈনিক পাঁচবার তার নাতির নামে দরুদ শরীফ পাঠ করবে।  আব্দুল মোত্তালিব কি কখনো ভেবেছিলেন তার এই ছোট্ট নাতির জন্ম নিয়ে আজ থেকে 1300 বছর পর নজরুল নামের বাংলাদেশী কোন এক পাগল কবি লিখে ফেলবে,,, তোরা দেখে যা মা আমিনার কোলে,,, মধু পূর্ণিমার সেথা চাঁদ দোলে । যেন অসাড় করে রাঙ্গার রবি দোলে,, তোরা দেখে যা মা আমিনার কোলে ।