আশাকরি আল্লাহর অশেষ রহমত ও দয়ায় ভালো আছেন। আজকে আল্লাহর সাহায্য লাভের একটি সহজ উপায় আপনাদেরকে জানিয়ে দিব।না টেনে ভিডিওটি শেষ পর্যন্ত দেখতে থাকুন। আজকের টপিক আল্লাহর সাহায্য লাভের একটি সহজ উপায়। মহান আল্লাহর সাহায্য ছাড়া মানব জীবন অচল। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বান্দা আল্লাহর সাহায্যের মুখাপেক্ষী। তিনি সাহায্য না করলে মানুষের পক্ষে কোন কাজ করা সম্ভব নয়।এজন্য সর্বদা তাঁরই কাছে সাহায্য কামনা করা বান্দর আবশ্য কর্তব্য।তাই তো বান্দা প্রতি নামাজে,প্রতি রাকাতে বলে। আমরা তোমারই ইবাদাত করি এবং তোমারই কাছে সাহায্য চাই(সূরা ফাতিহাঃ৪)।নিজের জীবনে এ আল্লাহর তালার সাহায্য পাওয়ার একটি সহজ উপায় হচ্ছে অন্য কে সাহায্য করা।মানুষকে সহযোগিতা করলে নিজের কাজেও আল্লাহ তালার সাহায্য পাওয়া যায়।এটা একটি বড় সওয়াবের কাজ। এর ফজিলত অনেক। বিভিন্ন হাদিসে রাসুল (সাঃ)মানুষকে সাহায্য করতে উদ্ভুদ্ধ করেছেন।এক বিখ্যাত হাদিসে এসেছেঃ বান্দা যখন তার ভাইয়ের সাহায্যে নিরত থাকে,আল্লাহ তার সাহায্যে থাকেন। (সহী মুসলিমঃ২৬৯৯) উক্ত হাদিসে মানুষকে সাহায্য করার একটি বিশাল ফজিলত বলা হয়েছে। যে ব্যক্তি মানুষের সাহায্য -সহজগিতা করবে। আল্লাহ তালাও তাকে সাহায্য করবেন। সরাসরি সাহায্যে করা কিংবা পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করাসহ সব ধরনের সাহায্যই এর অন্তর্গত। সব শ্রেনির মানুষকে সাহায্য করা কিংবা পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করাসহ সব ধরনের সাহায্যই এর অন্তভূক্ত।সকল মুসলমান ভাই ভাই। হাদিসে মুসলিম না বলে ভাই শব্দ বলা হয়েছে।মানুষ আপন ভাইকে যেমন আন্তরিকতার সাথে সাহায্য করে।তেমনি তার মুসলমান ভাইকও স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে সাহায্য করে।আরেকটি বড় হাদিসের একাংশে রাসুলে কারিম (সাঃ) হযরত আবূ যর গিফারী (রাঃ)কে বলেছেন। কোন কারিগর কে সাহায্য কর অথবা কোন অক্ষম ব্যক্তির জন্য কাজ কর।(সহীহ্ মুসলিমঃ৮৪সহীহ্ বুখারীঃ ২৫১৮)।এই হাদিসে নিদিষ্ট করে যারা জীবিকা উপার্জনের জন্য নিজে প্ররিশ্রম করে।তাদের সাহায্য কারার কথা বলা হয়েছে। কোন ক্ষেত্রে টাকা পয়সা দিয়ে আবার কোন ক্ষেত্রে তার কাজে সহযোগিতা করে।যার দ্বারা যেমন ও যতটা সহযোগিতা করা সম্ভব সেটাই করতে বলা হয়েছে।কোনো কারিগরকে তার কাজে সাহায্য করার পাশাপাশি আরেকটি বড় সওয়াবের ক্ষেত্র হলো,যে ব্যক্তি কোনো কাজ জানেনা, তাকে উপযুক্ত কোন কাজ শিখিয়ে দেয়া।যার জন্য যে ধরনের কাজ সহজ ও উপযোগী তাকে সে কাজ শিখিয়ে দেয়া। অতবা তার কাজের ক্ষেত্র বানিয়ে দেয়া।মানুষকে নানা ভাভে সাহায্য-সহযোগিতা করা যায়।
যেমন রাস্তা ঘাটে অনেক বয়ষ্ক মানুষকে দেখা যায়, পরিশ্রম করে নিজের কাজ করছে,কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। কিন্তুু পয়সা উপার্জনের জন্য কষ্ট করে তাকে কাজ করতে হয়।এমুহূর্তে তাকে সাহায্য করা।কেউ হয়ত ভারী কোনো বোঝা তুলছে।তাকে সেটা তুলতে সাহায্য করা।কেউ কোনো ভাড়ী জিনিস নামাচ্ছে সেটা নামাতে তাকে সাহায্য করা।কেউ কোনো কাজ করতে না পারলে অথবা কাজ করে ক্লান্ত হয়ে পরলে তাকে সাধ্যমতো সাহায্য-সহযোগীতা করা।
মোটকথা যার যেমন সাহায্য-সহযোগীতা দরকার
নিজের পক্ষে যতটুকু সম্ভব করে দেয়া।যারা আমাদের অধিনে কাজ করে, তাদেরও কাজে সাহায্য করা।তাদের কাজ হালকা করে দেয়া ও কমিয়ে দেয়া।এতে তাদের উপকারের পাশাপাশি নিজেরও উপকার রয়েছে। আরেকটি উপায় হলো অনেক সময় দেখা যায়, কেউ কোনো কাজের কথা বলে, কিন্তু সেই কাজ করার জন্য তার কাছে কোন উপকরণ থাকে না।তার কাছে সেটা কেনার মতো পয়সাও থাকেনা,তাকে কিছু টাকা-পয়সা দিলে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে অথবা বানাতে পারবে।
বিখ্যাত সাহাবি সালমান ফারসি (রাঃ)প্রসিদ্ধ ঘটনাটি
তো সকলেরই জানা আছে।তিনি মদিনায় এক ইহুদীর গেলাম ছিলেন,নবীজী তাকে বলেন, তুমি আজাব হওয়ার জন্য তোমার মুনিবের কাছে মকাত্তবা চুক্তি করো।সে ইহুদী সালমান ফারসি(রাঃ)কে শর্ত দিল,নিজের পক্ষ থেকে তিনশ খেজুর গাছ রোপণ করে দিলে,এবং চল্লিশ উকিয়া
স্বর্ন দিলে দাসত্ব থেকে মুক্তি পাবে।সালমান ফারসি (রাঃ) নবীজীকে বিষয়টি জানালেন।নবীজি সাহাবায় কেরামকে সহযোগিতা করতে বললেন।সাহাবায়ে কেরামের কেউ বিশটি কেউ পনেরটি কেউ দশটি করে খেজুর গাছের চারা দিলেন।
তার পর নবীজি নিজ হাতে সেগুলো রোপণ করে দিলেন।এভাবে নবীজীসহ সাহাবায়ে কেরাম মিলে হযরত সালমান ফারসি (রাঃ) কে দাসত্ব থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করলেন।
তিনশ কেজুর গাছের চারা তার একার পক্ষে যোগাড় করা অনেক কটিন ছিল। কিন্তু সাহাবায়ে কেরাম সকলে কিছু কিছু করে চারা দেওয়ায় তার চারার ব্যাবস্তা খুব সহজেই হয়ে গিয়েছিল।কেবল চারা দিয়েই সাহাবায়ে কেরাম ক্ষেন্ত হননি,সেগুলোর জন্য গর্তও খুঁড়ে দিয়েছেন। রাসুলে পাক (সাঃ)স্বয়ং সেগুলো রোপণ করে দিয়েছিলেন।হাদীসে আর একটি ঘটনা বর্নিত হয়েছে, এক আনসারী সাহাবি রাসুলে পাক (সাঃ)এর কাছে এসে তীব্র অভাব-অনটনের কথা জানালেন। নবীজী বললেন তোমার কাছে যা আছে নিয়ে এসো।আনসারী সাহাবী একটা মোটা কাপড় আর বাটি নিয়ে এসে বললেন,এই কাপড়ের এক অংশ বিছিয়ে আর এক অংশ গায়ে দিয়ে আমি ঘুমাই,এই বাটি দিয়ে আমি পানি পান করি।নবীজী (সাঃ)সাহাবায়ে কেরাম কে বললেন, এগুলো এক দিরহাম দিয়ে আমার কাছ থেকে কে কিনবে?একজন বললেন আমি।,নবীজী (সাঃ)বললেন এক দিরহামের বেশি দিয়ে কে কিনবে?একজন বললেন আমি দুই দিরহাম দেব।নবীজী (সাঃ)দুই দিরহাম দিয়ে তার কাছে সেগুলো বিক্রি করে দিলেন।তার পর ওই আনসারী সাহাবিকে বললেন, নাও এক দিরহাম দিয়ে তোমার পরিবারের জন্য খাবার কিনবে।আর এক দিরহাম দিয়ে কুঠার কিনবে।তার পর ওই উপত্যকায় গিয়ে কাটাদার ও শুকনো ডাল কাটবে।(এবং বিক্রি করবে)দশ দিন পর এসে অবস্থা জানাবে।ওই সাহাবী দশ দিন পর এসে বললেন।আপনি আমাকে যে নির্দেশ দিয়েছেন তাতে আমার অনেক বরকত হয়েছে(শরহু মা-আনিল আছর তহাবীঃ৪২৪৬)।মানুষকে সাহায্য-সহযোগীতা করতে গিয়ে সাহাবায়ে কেরাম ও আমাদের নবী কারিম(সাঃ)নাম যশ খয়াতির কথা ভাবেনি।
মহান আল্লাহ তালা আমাদের তাউফিক দান করুন, আমিন।
আল্লাহ সুবহানাহু তায়া’লা আমাদের প্রত্যেক্যে সুস্থ রাখেন সুন্দর রাখেন এবং নিরাপদে রাখেন এই কামনায় আজকের ভিডিও টি এখানেই সমাপ্তি,,,
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারকাহতু
0 Comments