আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ
বন্ধুরা আশা করছি আপনারা সকলেই মহান আল্লাহ রব্বুল আলামীনের অশেষ রহমতে ভাল আছেন,, ইতিমধ্যে আমরা সকলেই জেনে গিয়েছি যে,,, কাল থেকে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে একটি মুসলিম বোনের ভিডিও ব্যাপক আকারে ভাইরাল হয়েছে।
যেখানে একজন মুসলিম বোন আল্লাহু আকবার ধ্বনি দিয়ে হাজার হাজার হিন্দুদের মোকাবেলা করছে।
বন্ধুরা,,,চলমান.....
হিজাব বিতর্কে তুমুল উত্তেজনা কর্নাটকে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে স্কুল কলেজ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন প্রদেশটির সরকার।
ভারতে উগ্র হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসীরা হিজাব পরায় মুসলিম বোনের সামনে জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে হেনস্তার চেষ্টা করেছে।
এতগুলো উগ্র সন্ত্রাসের সামনে একজন কিশোরী মাথা তুলে বুক উচিয়ে নিশ্চিতে ক্লাসে চলে গেল,,, স্রেফ আল্লাহু আকবারের শক্তি দিয়ে।
ভারতের কর্নাটকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিয়ে বিতর্ক ও উত্তেজনা এখন তুঙ্গে।
এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দেয় হিজাব বা ধর্মীয় পরিচয় বহনকারী পোশাক পরা যাবে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।
এরপরে আরো উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্যের শিক্ষাঙ্গন। ক্যামেরায় ধরা পড়া শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি অবস্থানের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়েছে।
এই ভিডিওতে দেখা যায়,, কর্নাটকের একটি কলেজ চত্বরে হিজাব পরা এক ছাত্রী হাঁটছেন,, গেরুয়া ওড়না পরা একদল তরুণ তাকে ঘিরে হিজাব বিরোধী স্লোগান দেন,, এবং হেনস্থা করেন।
শত শত তরুণ এর সামনে একাই প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশংসায় ভাসছেন কর্নাটকের মুসকান নামের ওই মুসলিম ছাত্রী।
আর এই ঘটনা ঘটেছে কর্নাটকের মান্দিয়া প্রাক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে।
ভিডিওতে দেখা যায় ওই তরুণী স্কুটার পার্কিংয়ে রেখে কলেজ ভবনের দিকে হাঁটছে।
গেরুয়া ওড়না পরা একদল তরুণ জয় শ্রীরাম স্লোগান দেয় এবং তার দিকে এগিয়ে যায়।
পাল্টা আল্লাহু আকবার স্লোগান দেওয়ার সময়,, এই তরুণীকে ভীত দেখা যায়নি।ওই সময় হাত উপরে তুলে আল্লাহু আকবার শ্লোগান দিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে দেখা যায় মুসকানকে।পরে কলেজের অধ্যক্ষ এবং অন্যান্য শিক্ষকরা তাকে সরিয়ে নেন।
কলেজে এক ব্যক্তি কে উদ্দেশ্য করে মুসকান জানায়,, আমি বোরকা পড়লে সমস্যা কি???
গেরুয়া ওড়না পরা তরুণদের সামনে একাই প্রতিবাদ জানানোর সময় কোন ধরনের ভয় পায়নি বলে এনডিটিভিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন মুস্কান।।।
মুসকান বলেছে আমি ভীত ছিলাম না।
আমি যখন কলেজে ঢুকে পড়লাম তখন তারা আমাকে বাধা দিচ্ছিল,, কারণ আমি বোরকা পরেছি...
তারা জয় শ্রীরাম স্লোগান দেওয়া শুরু করে।
আমিও আল্লাহু আকবার বলে চিৎকার শুরু করি।
কলেজের অধ্যক্ষ এবং প্রভাষক আমাকে সমর্থন জানান। তারা আমাকে রক্ষা করেন।
মুস্কান বলছে কলেজে যে ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভ করেছে,, তাদের 10 শতাংশকে সে চিনে বাকিরা বহিরাগত বলে ধারণা তার।
মুসকান আরো জানায়,,
শিক্ষা আমাদের অগ্রাধিকার,, তারা আমাদের শিক্ষা ধ্বংস করছে।
এদিকে...
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মঙ্গলবার ৮ই ফেব্রুয়ারি থেকে পরবর্তী তিনদিনের জন্য রাজ্যের সব স্কুল কলেজ বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ এ সুভমাই
এসময় বিষয়টি নিশ্চিত করে টুইটার বার্তা প্রকাশ করছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
সেখানে তিনি লেখেন আমি সমস্ত ছাত্র শিক্ষক এবং স্কুল-কলেজের ম্যানেজমেন্ট কর্তৃপক্ষ এবং কর্নাটকের জনগনকে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করছি।
এ লক্ষ্যে আগামী তিন দিনের জন্য সমস্ত হাই স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সকলকে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
তবে এরই মধ্যে হিজাবের ওপর রাজ্য সরকারের নিষেধাজ্ঞা জারি সংক্রান্ত নির্দেশনার বিরুদ্ধে রাজ্যের সরকারি কলেজের 5 নারী শিক্ষার্থী কর্নাটকের হাইকোর্টে পিটিশন দায়ের করেছে।
এবিষয়ে আদালতের সিদ্ধন্ত আসার আগ
পর্যন্ত সকলকে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার অনুরোধ জানিয়েছে আদালত।
গত মাসে উদুপি জেলা সরকারি বালিকা P U কলেজের 6 জন মুসলিম ছাত্রীকে হিজাব পরার কারনে ক্লাশেরর বাইরে বসতে বাধ্য করা হয়।
সেই সময়ে কলেজ প্রশাসন জানায় ইউনিফর্মের অংশ নয় হিজাব,, এবং ছাত্রীরা কলেজের নিয়ম লঙ্ঘন করেছে।
ছাত্রীদের ক্লাসে হিজাব পড়ার বিষয়ে আপত্তি জানায় স্থানীয় ডানপন্থী বিভিন্ন গোষ্ঠী।
পরে ওই রাজ্যের অন্যান্য এলাকাতেও হিজাব পরার বিরুদ্ধে গেরুয়া ওড়না পড়ে অনেক শিক্ষার্থী অবস্থা নিয়ে আন্দোলন শুরু করে।
তারা কলেজে হিজাব নিষিদ্ধের দাবি তোলে,, এবং হিজাববিরোধী বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেয়। কর্নাটকের বিজয়াপুরা জেলার অন্য দুই কলেজ,, শান্তিস্যরা পি ইউ এবং জি আরবি কলেজে হিজাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া অনেক ছাত্র শুক্রবার ও শনিবার গেরুয়া ওরনা পরে হিজাব এর প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে।
ছাত্র-ছাত্রীদের পাল্টাপাল্টি অবস্থানের কারণে কলেজ দুটি সোমবার বন্ধ করা হয়েছে।
তবে বিক্ষোভ-সহিংস আকার ধারণ করেছে মঙ্গলবার।
উদুপির একটি কলেজে হিজাব পরার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া গেরুয়া ওড়না পরা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মুসলিম ছাত্রীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং একে অপরকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে।
এরমধ্যে এলাকার একটি কলেজের সামনে এক মুসলিম ছাত্রী হিজাব পরে অবস্থান কর্মসূচি পালনের সময় আক্রান্ত হয়েছেন।
ওই ছাত্রীর অবস্থান কর্মসূচি পালনের সময় গেরুয়া ওড়না পরা শত শত ছাত্রী সেখানে বিক্ষোভ দেখান।
এসময় ওই ছাত্রীকে হেনস্তার পাশাপাশি জয় শ্রীরাম স্লোগান দিতে দেখা যায়।
তাদের পরে মুসলিম ছাত্রী শত শত শিক্ষার্থীর মাঝে আল্লাহু আকবার স্লোগান দেয়।
কর্নাটকের সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন কলেজের নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা ক্লাস হিজাব পরতে পারবেন।
কিন্তু পাঠদানের সময় তারা হিজাব পরতে পারবে না।
দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে ওই রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরাকা গ্যানেন্দ্র অবশ্য বলেছেন,,, শিশুদের স্কুলে হিজাব বা গেরুয়া ওড়না পরা উচিত নয়।
উদুপিতে হিজাব পরা নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ার পর কর্নাটকের অন্তত দুটি কলেজের অন্যান্য শিক্ষার্থী,,
যাদের মধ্যে দেশটির কট্টরপন্থী অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ এর সদস্য রয়েছে।
তারাও কলেজে হিজাব নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে।
হিজাব নিষিদ্ধের দাবি জানানো এবিভিপির সদস্যরাও কলেজে গেরুয়া ওড়না পরে,,,
বছরের পর বছর ধরে কর্নাটকে হিন্দু জাতীয়তাবাদী কর্মকাণ্ডবৃদ্ধি ও রাজ্যের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের,, প্রধানত মুসলিম এবং খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু হতে দেখা গেছে।
গত মাসে কর্নাটকের বিধানসভায় একটি আইন পাস হয়েছে।
এই আইনের মাধ্যমে তার চেয়ে ধর্মান্তর পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
রাজ্যের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার অভিযোগ করে বলেছেন ক্রিস্টান মিশনারীরা হিন্দুদের জোরপূর্বক ধর্মান্তর করেছে।
যদিও এই অভিযোগ খ্রিস্টান ধর্মীয় নেতারা
প্রত্যাখ্যান করেছেন।
বন্ধুরা ইসলাম হল পবিত্র ধর্ম। আর এই ধর্মের মানুষেরা আল্লাহ তাআলার হুকুম মেনে জীবন-যাপন করে।
আল্লাহর হুকুমের মধ্যে অন্যতম হলো পর্দা করা। পর্দা নারীদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং সকল কুদৃষ্টি থেকে একটি নারীকে হেফাজত করে। বোরকা পরা কতটা গুরুত্ব??? এবং ইসলাম কি বলে বোরকার সম্পর্কে???
এ ব্যাপারে পবিত্র কুরআনে অসংখ্য আয়াত নাজিল
হয়েছে...
হিজাব পরিধান করা ইসলামের অন্যতম ফরজ বিধান।
যদি কেউ এই বিধানের অমান্য করে তবে অবশ্যই তাকে পরকালের জবাবদিহিতার পাশাপাশি সাস্তি ভোগ করতে হবে।
আল্লাহ তাআলা কুরআন পাকের অনেক স্থানে পর্দা পালনের নির্দেশ দিয়েছেন
বন্ধুরা নিশ্চই বুজতে পারছেন,,
কর্নাটকের হিজাব মামলাটি এখন অত্যন্ত জটিল হয়ে দাঁড়িয়ে গেছে।
যেখানে হিন্দুরা হিজাবকে ব্যান করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। সেই মুহূর্তেই আমাদের এই বোন টি তার সাহসিকতা দেখিয়ে,, প্রত্যেকটি মুসলিম বোনদের মধ্যে সাহসিকতার আলো আরো প্রবল করে তুলেছে। এছাড়া মুসলিম বোনটির এমন সাহসিকতা দেখে জামায়াতে ইসলামী হিন্দের চেয়ারম্যান মাওলানা মাহমুদ মাদানী 5 লক্ষ টাকার পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছেন।
এবং তিনি তার টুইটার সাইটে শেয়ার করে বলেছেন,,, এতগুলো হিন্দু লোকের সামনে দাঁড়িয়ে আল্লাহু আকবার ধ্বনি দিয়ে পুরো সমগ্র মুসলিম জাতির মন কে উৎসাহিত করেছে আমাদের এই বোন।
তাই সে বোনের জন্য এই ছোট্ট 5 লক্ষ টাকার উপহার ঘোষণা করলাম।
সুবহানাল্লাহ!!
মহান আল্লাহতালা রব্বুল আলামীন আমাদের সকল মা-বোনদেরকে হিজাব বোরকা পড়ে নিজের
ইজ্জত কে বাঁচানোর তৌফিক দান করুন আমিন।
তো প্রিয় দর্শক যারা ভিডিওটি শেষ পর্যন্ত দেখেছেন তারা কমেন্টে লিখে জানাবেন।
আল্লাহ সুবহানাতায়ালা আমাদের প্রত্যেককেই যেন সুস্থ রাখেন ভাল রাখেন। নিরাপদে রাখেন। এই কামনাই আজকের ভিডিওটির এখানেই সমাপ্তি। আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু
0 Comments