Header Ads Widget

Responsive Advertisement

জুমার দিনে এই 5 টি কাজ করলে ঘরে বরকত আসবে ইনশাল্লাহ

 আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওবারাকাতুহু

 বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম 

 সুধী দর্শক মন্ডলী ইসলামের দৃষ্টিতে পবিত্র জুমার দিনের গুরুত্ব অপরিসীম।

 জুমার দিনকে সাপ্তাহিক ঈদের দিন ও বলা হয়েছে।

 জুমার দিনের সওয়াব ও মর্যাদা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার মতই

এদিন,,  ইসলামের ইতিহাসে বড় বড় মহৎ কিছু ঘটনা রয়েছে। 

জুমার দিনের গুরুত্ব আল্লাহতালার কাছে এত বেশি যে,, পবিত্র কোরআনুল কারিমে জুমআ' নামে একটি স্বতন্ত্র সূরা নাযিল করা হয়েছে। 

আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেন হে মুমিনগণ জুমআর দিনে যখন নামাযের আহ্বান জানানো হয় তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে মসজিদে এগিয়ে যাও। এবং বেচাকেনা ও দুনিয়াবী যাবতীয় কাজকর্ম ছেড়ে দাও। এটা তোমাদের জন্যে কল্যাণকর যদি তোমরা জানতে।

 (সূরা যুমার আয়াত 9)

 রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম একটি হাদিসে বলেছেন,, মুমিনের জন্য জুম'আর দিন হল সাপ্তাহিক ঈদের দিন।

 (ইবনে মাজাহ হাদিস নাম্বারঃ 1098)

  অন্য একটি হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম ইরশাদ করেছেন,,,, যে দিনগুলোতে সূর্য উদিত হয় ওই দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম।

 এই দিনেই হযরত আদম আলাইহিস সাল্লাম কে সৃষ্টি করা হয়েছে।

 ওই দিনই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে। এবং ওই দিনই তাকে জান্নাত থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। 

 আর ওই দিনই কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে।

( মুসলিম শরিফ হাদিস নাম্বারঃ 854)


 জুমার দিনের ফজিলত ও গুরুত্ব এর কথা আরো অনেক হাদিসে এসেছে।

 রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বলেছেন এটা জুমাবার,, অর্থাৎ

 শুক্রবার। 

 যেদিন এর মাধ্যমে আল্লাহ সুবহানাতায়ালা আমাদের পূর্ববর্তী জাতি থেকে পৃথক করেছেন।

 ইহুদিদের জন্য বিশেষ ইবাদত দিন ছিল শনিবার। খ্রীস্টানদের জন্য ছিল রবিবার।

  যখন আল্লাহতালা আমাদের প্রেরণ করলেন, তখন শুক্রবারকে জুমার দিন হিসেবে পালন করতে নির্দেশ দিলেন।

  (মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ 1797)

  সুবাহান আল্লাহ!!! 

 এই পবিত্র জুমার দিনে পাঁচটি কাজ করলে ঘরে অবশ্যই বরকত আসবে।

 এই সম্পর্কে আজকে আমরা আলোচনা করবো। আশা করি ভিডিওটি না টেনে সম্পূর্ণ দেখবেন। জুমার দিনে যে পাঁচটি কাজ করলে ঘরে বরকত বেড়ে যায়,,, তার মধ্যে এক নম্বর হলো জুমার দিন স্ত্রী সহবাস করা।

 সপ্তাহের অন্য দিনগুলোর মতো জুমার দিনে আমাদের কর্মব্যস্ততা কম থাকে। আর এই স্বল্প পরিসরে যদি স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে সময় দেয় তাহলে তাদের মাঝে ভালোবাসার বন্ধন আরও দৃঢ় ও মজবুত হয়ে থাকে। সপ্তাহে অন্তত একবার পরিপূর্ণ সময় নিয়ে সহবাস করার ফলে পরকীয়ায় জড়িয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও হ্রাস পাবে এবং সংসার সুখ স্বাচ্ছন্দে ভরে উঠবে।

 এবং ঘরে বরকত বেড়ে যাবে।

 রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন স্ত্রী সহবাসও একপ্রকার সাদাকা।

 আর আমরা জানি সাদাকার মাধ্যমে একদিকে যেমন ইনকিলাব হয়,,,, অন্যদিকে সাদাকার মাধ্যমে বিপদ-আপদ অসুখ-বিসুখ ইত্যাদি দূর হয়ে থাকে। তাই সংসারে  অল্প আয়েও বরকত বেড়ে যায়। 


রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম আরো বলেছেনঃ স্ত্রীর সাথে সহবাসে রয়েছে দানকারীর ন্যায় সওয়াব।

 ( সিলসিলা সহিহা হাদিস নাম্বারঃ 575)


 তাই যারা বিবাহিত আছে তারা এই দিনে একবার হলেও স্ত্রী সহবাস করবেন এতে করে পুরো সপ্তাহ জুড়ে স্ত্রীর মন ভালো থাকবে।


 আরো যারা এখনো বিবাহ করেননি বা স্ত্রীকে রেখে প্রবাসে আছেন তারা আল্লাহর জন্য ধৈর্যধারণ করবেন। এবং নিজের চরিত্রের হেফাজত করবেন।

 

 দ্বিতীয় নাম্বার জুমার দিন আসরের নামাজের পর আল্লাহর কাছে বেশি বেশি কল্যাণ কামনা করবেন। হযরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন,, জুমার দিন এমন একটি সময় আছে,, যখন কোন মুমিন বান্দা আল্লাহর কাছে ভালো কিছু প্রার্থনা করে আল্লাহ তখন অবশ্যই তা দান করেন।

( মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ 852) 

(মুসনাদে আহমদ হাদিস নাম্বারঃ 7151) 


জুমার দিনে দোয়া কবুল হওয়ার সময় এর ব্যাপারে 

প্রায় 45 টি মতামত পাওয়া যায়।

 তবে সর্বাধিক প্রসিদ্ধ মত হল,, আসরের নামাজের পর থেকে মাগরিব নামাজের সময় পর্যন্ত দোয়া কবুলের উত্তম সময়।

 হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত,, রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন,, জুমার দিনের কাঙ্খিত সময় হল আসরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত।

( মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ 5459) 

(তিরমিজি হাদিস নাম্বারঃ 889 23-29) 

তাই বরকতের শার্থে জুম'আর দিন আসরের নামাজের পর থেকে মাগরিব নামাজের সময় পর্যন্ত,, এই সময়ের মধ্যেই স্পেশালভাবে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবেন।


 তৃতীয় নাম্বার হল জুমার দিন নখ ও চুল কাটলে।

 

 জুমার দিন গরিবের হজের দিন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। আর তাই এই দিনে মসজিদে যাওয়ার আগেই হাত পায়ের নখ কেটে,, এবং গোপনাঙ্গের চুল কেটে,, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়েই গোসল করে তারপর মসজিদে যাবেন।

 মহিলারাও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয় জোহরের নামাজ আদায় করবেন। এতে করে একদিকে রাসুলের সুন্নত মানা হবে।

এবং ঘরে ও বরকত বেড়ে যাবে।

 রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ,, 

 (সহিঃ মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ 223) 

 

জুমার দিন গোসল করে আগে আগে মসজিদে যাওয়া অত্যন্ত সোয়াবের কাজ।

 রাসূল সাল্লাহু সাল্লামবলেছেনঃ 

 

যে ব্যক্তি জুমার দিন ভালো করে গোসল করে দ্রুততম সময়ে মসজিদে যায়,, এবং ইমামের কাছাকাছি বসেই মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে,,

 তার জন্য প্রতি কদমে  এক বছরের রোজা ও-নামাজের সওয়াব থাকবে। 

 (আবু দাউদ হাদিস নাম্বারঃ ৩৪৫)

 

 চতুর্থ নাম্বার যারা বিবাহিত আছে তারা স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে যেতে পারেন।

 কারণ রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম তার স্ত্রীকে নিয়ে ঘুরতে বের হতেন।

 ( সূত্র আবু দাউদ হাদিস নাম্বারঃ 2202)

( বুখারি হাদিস নাম্বারঃ 2758)

 এতে করে স্ত্রীর মন প্রফুল্ল থাকবে। এবং আপনার সংসারে স্ত্রী অধিক মনোযোগী হবেন। এবং সংসারেও বরকত বেড়ে যাবে।

  আর যারা অবিবাহিত আছেন তারাও সময়-সুযোগ করে নিজের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে,, বিশেষ করে পিতা-মাতা ভাই-বোন কে নিয়ে কোথাও থেকে মাঝে মাঝে ঘুরে আসতে পারেন।

 

 পঞ্চম নাম্বার বেশি বেশি নফল ইবাদত করা।

 

 রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম বলেন শুক্রবার হল,, সাপ্তাহিক ঈদের দিন 

 (ইবনে মাজাহ হাদিস নাম্বারঃ 1098)

 জুমার দিন যেহেতু সাপ্তাহিক সবচেয়ে ফজিলত পূর্ণ দিন তাই এই দিনে ফরজ ও সুন্নত ইবাদতের সাথে সাথে বেশি বেশি নফল ইবাদত করতে পারেন।

 এবং শুক্রবার আসরের নামাজের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত বেশি বেশি ইস্তেগফার দোয়া জিকির 

করবেন।

 এটি যে জায়নামাজে বসে করতে হবে তা কিন্তু নয়!!!!! বরং আপনি চলতে, ফিরতে, উঠতে, বসতে মনে মনে ইস্তেগফার করতে পারেন।


 তাছাড়া মাঝেমধ্যে জুমার দিন ও তার আগের দিন অথবা পরের দিন দুটি নফল রোজা রাখতে পারেন।


 এতে করে আপনার স্বাস্থ্য ও মন ভালো থাকবে  এবং সংসারের বরকত বেড়ে যাবে। ইনশাআল্লাহ।।

 

 তবে শুধু জুমার দিন নির্দিষ্ট করে রোজা না রাখার প্রতি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম নিষেধ করেছেন।

 কেননা ইয়াহুদীরা একদিন রাখে।

 তাই তাদের সদস্য যেন না হয় এজন্য রাসূলুল্লহ (সা) ইরশাদ করেছেন,, তোমাদের কেউ জুমার আগে বা জুমার পরে একদিন মিলানো ব্যতীত শুধু জুমার দিন রোজা রেখো না।

 ( সহিঃ মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ 1894)

 ( মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ 2545) 

 রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম ইরশাদ করেন তোমরা জুমার দিনে আমার উপর বেশী বেশী দরুদ পাঠ করো কেননা তোমাদের পাঠকৃত দুরুদ আমার সামনে পেশ করা হয়।

 ( আবু দাউদ হাদিস নাম্বারঃ 1047)

  এছারাও তিরমিজি  শরীফের হাদীসে বর্ণিত আছে,, যে ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম এর উপর একবার দরূদ পাঠ করে আল্লাহ তার উপর রহমত নাযিল করেন।।

  সুবহানল্লাহ!!

  

সুতরাং আমাদের এই জুমার দিন অন্যান্য আমলের সাথে সাথে বেশী বেশী দরুদ পাঠ করতে হবে।

জুমার গুরুত্ব ও তাৎপর্য বিবেচনা 

করে প্রতিটি মুসলিমের উচিত হবে এ দিনটিকে ভালোভাবে কাজে লাগানো।

 

এছাড়া জুমআ'র দিন সুরা কাহাফ পরবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি জুমআ'র দিন সুরা কাহাফ পাঠ করবে,, একটি নুর তার পা থেকে আসমান পর্যন্ত বিস্তৃত হবে হাশরের দিনে এই নুর তার জন্য আলো হবে।

 এবং এক জুমা থেকে অপরের পর্যন্ত তার সমস্ত গুনাহ সমূহ ক্ষমা করে দেয়া হবে।

  এবং এই দিনে বেশি বেশি দান-সাদকা করার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম তার উম্মতদের উৎসাহিত করেছেন।

 ( মুস্তাদরাক হাকেম হাদিস নাম্বারঃ 2133) 

 এছাড়া জুমার দিনে সুযোগ হলে মৃত আত্মীয় স্বজনের কবর জিয়ারত করে নিবেন।

  কারণ কবর জিয়ারত করা ও রাসুলের সুন্নত।

  রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম এর ব্যাপারে আমাদের উৎসাহ দিয়েছেন।

  হাদীসে এসেছে নবী সল্লালাহ সালাম বলেন,,, তোমরা তোমাদের মৃতদের কবর জিয়ারত কর, কেননা!!তা তোমাদের আখেরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।

  ( মুসলিম হাদিস নাম্বার ১৬০)

 তো প্রিয়  দর্শক যারা ভিডিওটি শেষ পর্যন্ত দেখেছেন তারা কমেন্টে আমি লিখে জানাবেন।

 আল্লাহ সুবহানাতায়ালা আমাদের প্রত্যেককেই যেন সুস্থ রাখেন ভাল রাখেন। নিরাপদে রাখেন। এই কামনাই আজকের ভিডিওটির এখানেই সমাপ্তি। আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু


Post a Comment

0 Comments