আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
সুপ্রিয় দর্শক মন্ডলী,,
আশা করি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অশেষ মেহেরবানি ও দয়ায় এই মাহে রমজানে আপনারা সবাই ভাল আছেন।
প্রিয় দর্শক রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,, রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দঘন মুহূর্ত রয়েছে।
একটি হলো ইফতারের সময়ে,,
অন্যটি হলো কিয়ামতের দিবসে নিজ প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাতের সময়। সুবহান আল্লাহ!!!
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এই হাদীসের আরো সুন্দর একটি উত্তর দিয়ে দিয়েছেন,, হাদীসে কুদসীতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন, আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন বলেন।
হে আমার বান্দারা রোজা আমার জন্য,, আর এর বিনিময় আমি নিজেই। সুবহানাল্লাহ!!
কিন্তু এমন পাঁচটি ভুল আছে যে 5 টি ভুলের কারণে সারাদিনের সব রোজা,, আমল, নামাজ বিফলে চলে যায়।
প্রিয় দর্শক আমরা ইফতারির সময় এই পাঁচটি ভুল একবারই করবোনা।
প্রিয় দর্শক,,
সর্বপ্রথম হচ্ছে সঠিক সময় ইফতার করা,,
শিয়া সম্প্রদায় আকাশ কালো না হলে ইফতার শুরু করেন না। কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জামানায় শিয়া-সুন্নি ছিল না।
তবু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম আমাদের তাড়াতাড়ি ইফতার করার নির্দেশ দিয়েছেন।
যেহেতু ইয়াহুদী ও খ্রিস্টানরা রোজা রেখে দেরি করে ইফতার করে, তাই তিনি আমাদের তাদের বিরুদ্ধাচারণ করতে আদেশ প্রদান করেছেন।
আমাদের উচিত রাসূল সাল্লাহু সালাম এর সুন্নত অনুযায়ী সূর্যাস্তের সাথে সাথে ইফতার শুরু করে দেয়া। আর এতেই গোটা মুসলিম জাতির জন্য কল্যাণ নিহিত রয়েছে।।
দ্বিতীয় ভুলটি প্রথম ভুলের সাথে সম্পর্কযুক্ত,,
আর তা হলো,, অনেক লোক দেখা যায়, রেডিও টিভির আযান এর জন্য অপেক্ষা করে।
কিন্তু আমরা অনেকেই ভুলে যাই যে,, বাংলাদেশে প্রায় সকল টিভি চ্যানেলে আজান হয় ঢাকার স্থানীয় সময় অনুযায়ী।
এখন আপনি যদি অন্য জেলায় থাকেন,, যেখানে ঢাকার চাইতে পাঁচ মিনিট পূর্বে ইফতারের সময় হয়ে গেছে,,
তাহলে আপনার 5 মিনিট দেরি হয়ে গেলো।
আপনি কিন্তু রাসূলের সুন্নাহ থেকে বঞ্চিত হয়ে গেলেন। সুতরাং মনে রাখবেন,, সারাদিন রোজা রেখে কি লাভ???
যদি রাসুল সাঃএর সুন্নহ অনুযায়ী ইফতার করতে না পারেন???
তৃতীয় ভুলটি হলো,,
ইফতার সামনে নিয়ে দোয়া না করে দুনিয়াবী কথা
বলা।
আমাদের সমাজে এখন এমন অনেক মানুষ রয়েছে,, ইফতারের কয়েক মিনিট আগে কি আমরা ইফতার করি,, অথবা ইফতারি সামনে নিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া না করে দুনিয়াবী নানান কথা বার্তা বা মোবাইল টিপে কাটিয়ে দেন। এটি একদম ঠিক কাজ নয়। ইফতারের আগে আমাদের সবাইকে আল্লাহর দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।
নিজের মনের কোন আশা থাকলে তখন আল্লাহ কাছে জানাতে হবে। কারণ এই সময় আল্লাহ বান্দার প্রতি সদয় হোন।
হাদিসে আছে,, ইফতারি সামনে নিয়ে বান্দার একটি দোয়া অবশ্যই কবুল করা হয়। সুবহানাল্লাহ!!!
অথচ আমরা এই সময়টুকু দুনিয়াবী গল্পগুজব অথবা মোবাইল ট্যাপ করে সময় কাটাই, যা খুবই দুঃখজনক।
চতুর্থ ভুলটি হলো,,
লোকদেখানো ইফতার,,
আজকাল আমাদের সমাজে লোকদেখানো ইফতার সামগ্রী বিতরণ খুবই পরিলক্ষিত হয়।
আর শত শত মানুষ একসাথে ইফতার সামগ্রী নিতে গিয়ে পদদলিত হয়ে বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।
এ ছাড়াও একজন মানুষকে ইফতার সামগ্রী দান করতে গিয়ে,, ছবি উঠিয়ে আবার সেই ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হয়। এতে যাকে দান করা হলো তাকে সামাজিকভাবে অপদস্ত করা হলো।
প্রিয় দর্শক,, একবার ভেবে দেখুন!! আপনি একটি আমল করতে গিয়ে তিনটি ভয়াবহ কবিরা গুনা নিয়ে আমলের পাল্লাকে দুর্বল করে বরং গুনাহ এর পাল্লা ভারী করছেন। এ কাজ করবেন না, দান গোপনীয়তার সাথে করুন।
আপনাকে যদি প্রকাশ করতে হয়,, এমনভাবে করুন, যাতে দান গ্রহণকারীদের পরিচয় মানুষ জানতে না পারে। কারণ দান গ্রহণকারীদের পরিচয় জানিয়ে আপনি মূলত তাদেরকে ছোট করলেন।
প্রিয় দর্শক,,
সর্বশেষ ভুলটি হলো পেটপুরে পানাহার করা, ইসলামে পেটপুরে পানাহার সমর্থন করা হয় না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেছেন,, মানুষ যে সকল পাত্র পূর্ণ করে, তার মাঝে মানুষের পেট অপেক্ষা আর কোন খারাপ পাত্র নেই।
মানুষের কোমর সোজা রাখার জন্য কয়েকটি লোকমাই যথেষ্ট।
এর থেকেও বেশি যদি প্রয়োজন হয়, তবে পেটের এক-তৃতীয়াংশ পানির জন্য। এবং অবশিষ্ট এক-তৃতীয়াংশ খালি রাখার জন্য আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
রাতে তো তারাবি পড়তে হবে, এখন আপনি যদি এত বেশি ইফতার করেন, যাতে আপনার পেট কানায় কানায় ভর্তি হয়ে যায়। তাহলে আপনি ক্লান্ত হয়ে কিয়ামুল লাইলের যে ফজিলত রয়েছে, তা থেকে বঞ্চিত হয়ে যাবেন। তা ছাড়া অতিরিক্ত খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ও ক্ষতিকর।
প্রিয় দর্শক মন্ডলী,, আশা করি আমরা এই পাঁচটি ভুল ইফতারের সময় করব না। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের রোজাকে কবুল করুন। আমাদের ইফতার এর উছিলায় পরকালে আমাদের জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দান করুন।
আমিন!!
0 Comments