Header Ads Widget

Responsive Advertisement

কত টাকা থাকলে যাকাত দিতে হবে | কখন ও কাদেরকে দিবেন?How much money to pay zakat 👇👇👇👇

 আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। 

সুপ্রিয় দর্শক মন্ডলী আশা করি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অশেষ মেহেরবানি ও দয়ায় আপনারা সবাই ভাল আছেন।      

(Online madrasha bd)    ইউটিউব চ্যানেলের আরো একটি নতুন ভিডিওতে আপনাদেরকে জানাই স্বাগতম।   

প্রিয়  দর্শক,, 

জাকাত’ ইসলামের মূল পাঁচ স্তম্ভের একটি। জাকাত অস্বীকারকারি নিঃসন্দেহে কাফির। বান্দার বৈধ উপার্জন থেকে একটি ‘নির্দিষ্ট পরিমাণ’ আল্লাহর নির্দেশিত পথে ব্যয় করার নাম ‘জাকাত’।


আল্লাহ তা'আলা কোরআন মজিদে এরশাদ করেন, 'হে মুমিনগণ! তোমরা তোমাদের বৈধ উপার্জন এবং আমি তোমাদের জন্য ভূমি থেকে যে শস্য উৎপন্ন করি তা থেকে আল্লাহর নির্দেশিত পথে ব্যয় (জাকাত দাও) কর।' (সূরা বাক্বারা ২৬৭ নং আয়াত)


সূরা বাইয়্যিনাহ এর ৫ নম্বর আয়াতে আল্লাহ পাক এরশাদ করেন, তাদের এ মর্মে আদেশ করা হয়েছে যে, তারা একাগ্রচিত্তে শুধুমাত্র আল্লাহ তায়ালা'র এবাদত করবে, যথাযথভাবে সালাত আদায় করবে, জাকাত প্রদান করবে, আর এটাই হলো সুপ্রতিষ্ঠিত দ্বীন।'


হযরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে  বর্ণীত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) এরশাদ করেন, পাঁচটি বিষয়ের উপর ইসলামের ভিত্তি। এক- এ কথার স্বাক্ষ্য দেওয়া যে নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা ব্যতীত আর কোনো উপাস্য নেই আর নিশ্চয়ই মোহাম্মদ (সা.) তাঁর সন্মানিত বান্দা ও রাসূল, দুই- সালাত কায়েম করা, তিন- জাকাত আদায় করা, চার- হজ করা, পাঁচ- রমজানে রোজা রাখা। (সহিহ বুখারী)



ইসলামে জাকাতের গুরুত্ব অপরিসীম। জাকাত দিলে সম্পদ কমে যায় না বরং বৃদ্ধি পায়। এটি আপনার উপার্জিত ও জমারাখা সম্পদকে পবিত্র করে। জাকাত আদায়কারির পুরষ্কার হচ্ছে আল্লাহ সন্তুষ্টি, আখেরাতে মুক্তি ও জান্নাত।


জাকাত আদায়কারীর জন্য জাকাত দেওয়াকে দয়া দাক্ষিণ্য হিসেবে দেখার সুযোগ নেই। মালের নেসাব পরিমাণ জাকাত আদায় করা ‘দয়া নয়’ বরং ‘গরিবের হক’। ইসলামী শরীয়ত মতে সুষ্ঠুভাবে জাকাত বন্টন করা গেলে দারিদ্রমুক্ত একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক সমাজ কিংবা রাষ্ট্র গড়ে তোলা সম্ভব। জাকাত ধনী ও গরীবের মধ্যকার বৈষম্য কমিয়ে আনে।


কিন্তু আফসোস হচ্ছে আমাদের সমাজে সম্পদ আছে, নামাজ পড়েন, রোজাও রাখেন কিন্তু জাকাত আদায় করেন না এমন অনেক মুসলমান আছেন। এমন বান্দার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে জাকাত আদায় না করার কারণে ভয়াবহ পরিণতির কথা বলা হয়েছে।


জাকাত কখন, কিভাবে আদায় করতে হবেঃ

জাকাত কখন, কিভাবে আদায় করতে হবে এবং কার উপর ফরজ করা হয়েছে তা রাসূলে পাকের হাদিস দ্বারা বর্ণনা করা হয়েছে। কাকে দিতে হবে তা তো স্বয়ং আল্লাহ রাব্বুল আলামীনে বলে দিয়েছেন।


সর্ণের জাকাতঃ

হযরত আবু সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, পাঁচ উকিয়া (এক উকিয়া = ৪০ দিরহাম, আর ৫ ‍উকিয়া = ২০০ দিরহাম, এই দিরহামকে এবার বাংলা টাকায় গণ্য করতে হবে)পরিমাণের কম সম্পদের উপর যাকাত নেই এবং পাঁচটি উটের কমের উপর যাকাত নেই। পাঁচ ওসাক (পাঁচ ওসাক =৩শ সা, এক সা = প্রায় তিনসের ১১ছটাকের সমান) এর কম উৎপন্ন দ্রব্যের উপর যাকাত নেই। (সহিহ বুখারী)


নগদ অর্থের জাকাত :

কাগজের তৈরি নোটের উপরও জাকাত দিতে হবে। কারণ এ নোটগুলো রূপার বদলেই চলমান, সুতরাং এগুলো রূপার স্থলাভিষিক্ত হবে এবং এর মূল্য রূপার নিসাবের সমপরিমাণ হলে, তাতে জাকাত আদায় করতে হবে।


প্রতিষ্ঠানের রীতি অনুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে চাকরিজীবীর বেতনের একটি অংশনির্দিষ্টহারে কর্তণ করে ভবিষ্যৎ তহবিলে জমা করা হলে ওই অর্থের উপর জাকাত ধার্য হবে না। কারণ ওই অর্থের উপর চাকরিজীবীর কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ভবিষ্যৎ তহবিলের অর্থ ফেরৎ পাওয়ার পর জাকাত আওতাভুক্ত হবে। 

 

পেনশনের টাকাও হাতে পেলে জাকাত হিসাবে আসবে। মানত, কাফ্ফারা, স্ত্রীর মাহরের জমাকৃত টাকা, হজ ও কোরবানির জন্য জমাকৃত টাকার উপরেও বছরান্তে যথা নিয়মে জাকাত দিতে হবে। 


বৈদেশিক মুদ্রার ওপর জাকাত :

জাকাত প্রদানের সময় উপস্থিত হলে মালিকানাধীন সকল বৈদেশিক মুদ্রার নগদ, ব্যাংকে জমা, টিসি, বন্ড, সিকিউরিটি ইত্যাদি যাকাত প্রদানকারী ব্যক্তির বসবাসের দেশের মুদ্রাবাজারে বিদ্যমান বিনিময় হারে মূল্য নির্ধারণ করে অন্যান্য জাকাতযোগ্য সম্পদের সাথে যোগ করে প্রদান করতে হবে।


মোহরাণার অর্থের উপর যাকাত : মোহরানা বাবদ স্ত্রীর কাছে জমাকৃত অর্থের উপর জাকাত ধার্য হবে।


ভূমি থেকে উৎপন্য ফসলাদিঃ


হাদিসে আছে ‘বৃষ্টির পানিতে উৎপাদিত শস্য ও ফল-ফলাদিতে পাঁচ ওসক পরিমাণ সম্পদ নিসাব হিসেবে ধর্তব্য ।


ইসলামি শরীয়া আইনে, এক ওসক = ৬০ 'সা' সুতরাং ৫ ওসক = ৩০০ সা'


আমাদের সমাজে বর্তমানে প্রচলিত পরিমাপ পদ্ধতিতে হিসাব করলে এক 'সা' = ২০৪০ গ্রাম সুতরাং ৩০০ সা' = ৬১২০০০ গ্রাম = ৬১২ কেজি / ১৫.৩ মন।


গবাদিপশুঃ

যদি কারো মালিকানায় সায়িমা সংখ্যক গবাধি পশু থাকে তাহলে জাকাত দিতে হবে।

অর্থাৎ ন্যুনতম ৫টি উট অথবা ৩০টি গরু-মহিষ অথবা ৪০ টি ছাগল-ভেরা-দুম্বা অথবা একত্রে নিসাব পরিমাণ গবাধিপশুর মালিকানা থাকলে তবে তাকে এগুলোর মূল্য নির্ধারন করে ২.৫% হারে জাকাত দিতে হবে।


চার, ব্যবসায়ী পণ্যঃ


স্থাবর-অস্থাবর সকল প্রকার ব্যবসায়ী পণ্যের ওপর জাকাত ওয়াজিব। সেগুলোর সর্বশেষ বাজার মূল্য নির্ধারণ করে ২.৫% হারে জাকাত প্রদান করতে হবে।

বিভীন্ন ফ্যাক্টরিতে মেশিনারিজ বা খুচরা যন্ত্রাংশ ও এ জাতীয় ক্ষুদ্রপণ্যের ব্যবসায়ীদের কর্তব্য হল, ছোট-বড় সকল অংশের মূল্য নিধারণ করে নিবে, যাতে কোন কিছু বাদ না পড়ে। পরিমাণ নির্ণয়ে যদি জটিলতা দেখা দেয়, তাহলে সতর্কতামূলক বেশী দাম ধরে জাকাত আদায় করবে, যাতে সে সম্পূর্ণ দায়িত্ত্ব থেকে মুক্ত হতে পারে।


যে মালের  জাকাত দিতে হবে নাঃ

মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যাবহার্য বস্তু যথা খাবার, পানীয়, আসবাবপত্র, বাহন, পোষাক, (সোনা-রূপা ছাড়া) অলংকারসহ ব্যবহার্য পণ্যের ওপর জাকাত দিতে হবে না। গোলাম, বাদী, ঘোড়ার উপর জাকাত দিতে হবে না।


কোথায় দিবেন যাকাত:


কোথায় এবং কাকে যাকাত দিবেন তার পূর্ণ বিবরণ দিয়েছে ইসলাম। এ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে। সুরা তওবার ৬০ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, “যাকাত কেবল ফকির, মিসকিন ও যাকাত আদায়কারী কর্মচারীদের জন্য, যাদের চিত্ত আকর্ষণ করা প্রয়োজন তাদের জন্য অর্থাৎ নও মুসলিম, দাস মুক্তির জন্য, ঋণে জর্জরিত ব্যক্তিদের ঋণমুক্তির জন্য, আল্লাহ পাকের রাস্তায় জিহাদকারী এবং মুসাফিরদের জন্য।

তাই উপরের আয়াতের ব্যাখ্যা এবং রাসুলের হাদিস অনুযায়ী নিম্নোক্ত ব্যক্তিকে জাকাত প্রদান করতে হবে। এই যেমন ফকির, যার নিকট খুবই সামান্য সহায় সম্বল আছে। কোন মিসকীন ব্যক্তি। যার আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি এবং আত্মসম্মানের খাতিরে কারো কাছে হাত পাততে পারে না। পাশাপাশি যাকাত আদায় ও বিতরণের কর্মচারী।

মহান রাব্বুল আলামীন আমাদের সকলকে জাকাতের সঠিক নিয়ম মেনে,,সম্পদের পূর্ণ  জাকাত আদায় করার তাউফিক দান করুন। আমিন।

প্রিয়  দর্শক,, 

আজকের ভিডিও এপর্যন্তই 

এতক্ষন সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ,।

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।


Post a Comment

0 Comments