হযরত আবু তালেব ছিলেন এমন এক ব্যক্তি যিনি সর্বাবস্থায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর সামনে ঢাল হয়ে দাড়িয়ে ছিলেন এবং সর্ব প্রকার বিপদ আপদ থেকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে উদ্ধার করে গিয়েছিলেন, কিন্তু যখন উনার চাচা ইন্তেকাল করেন তখন কাফেরদের সামনে আর কোনো বাধাই থাকলো না, যার কারণে এবার প্রকাশ্যে তারা প্রচুর সাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর উপরে অত্যাচার শুরু করে,
কিন্তু এত কিছুর পরেও বিবি খাদিজা ছিলেন এমন এক মহীয়সী নারী তিনি তখনও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে সর্বাবস্থায় সান্ত্বনা দিয়ে যাচ্ছিলেন, কিন্তু আল্লাহ হয়তো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর ভাগ্যে অন্য কিছু লিখে রেখেছিলেন যার কারণে উনার চাচা মৃত্যুবরণ করার মাত্র 35 দিনের মাথায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে একা করে উনার একমাত্র প্রিয়তমা স্ত্রী জিনিস সর্বাবস্থায় সাল্লাহু সাল্লাম এর সাথে ছিলেন, জিনিস সর্বাবস্থায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে আগলে রেখেছিলেন তিনিও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে একা রেখে আল্লাহর নির্দেশে নিজেকে মৃত্যুর হাতে সপে দেন,
হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহার মৃত্যু ছিল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর জন্য অনেক বড় একটি ধাক্কা, কেননা তিনি ছিলেন এমন এক রমণী যিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর দুঃখে সবসময় উনার পাশে ছিলেন, সর্বাবস্থায় উনাকে উৎসাহ এবং সান্ত্বনা প্রদান করতেন, প্রথমে প্রিয় চাচার মৃত্যু এর কিছুদিনের মধ্যে ওনার প্রিয়তমার এই মৃত্যু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের মানসিক এবং শারীরিকভাবে অনেক বড় একটি প্রভাব ফেলে,
কেননা ইনিই ত ছিলেন সেই রমণী যখন হেরাগুহায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম একাকী সময় অবহিত করতেন তখন তিনি অনেক কষ্ট সহ্য করে পাহাড়ের চূড়ায় ওনার জন্য খাবার নিয়ে যেতেন,
ইনিই ছিলেন সেই নারী যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর উপর সর্বপ্রথম ওহী নাযিল হয় তখন বিবি খাদিজা ছিলেন যিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে সান্তনা প্রদান করেছিলেন এবং উনাকে বলেছিলেন আল্লাহ আপনাকে কখনো অপদস্থ করবেন না কেননা আপনি হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যিনি অসহায় গরীব দুঃখীকে সাহায্য করেন, বিধবা মহিলার দুঃখ-দুর্দশা দূর করার জন্য সর্বোপরি চেষ্টা করেন, এতিমকে সাহায্য করেন, এবং জালিমের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন,
আজ ওনার কলিজার সবচাইতে কাছের যে মানুষটি ছিল তিনি আল্লাহর ডাকে সারা দিয়ে উনার দরবারে হাজিরা দিয়েছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর তখনকার অবস্থাটা এমন ছিল যেন এক মুহূর্তে উনার সামনে পৃথিবীর সব আলো দপ করে নিভে গেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম অনেক কষ্টে নিজেকে সংবরণ করে উনার প্রিয়তমা স্ত্রীকে শেষ বিদায়ের কাফনের কাপড় পরিয়ে জান্নাতুল মোয়াল্লায় নিয়ে যান,
হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা এমন সময় মৃত্যুবরণ করেছিলেন যখন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর উপর নামাজের বিধান অবতীর্ণ হয় নি, যার কারণে উনার প্রিয় কলিজার টুকরা হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তালা আনহার কোন জানাজার নামাজ পড়া হয়নি, আর বিবি খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা যখন ইন্তেকাল করেন তখন রমজান মাস ছিল ,আর যেহেতু তখনো রমজানের রোজার বিধান অবতীর্ণ হয় নি যার কারণে তখন কোন মুসলমান রোজা ছিল না,
যখন বিবি খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু এর কবর তৈরি হয়ে যায় তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম সেই কবরে নিজে শুয়ে পড়েন এবং সেখানে স্ত্রী হারানোর বেদনা কে কোনমতে বুকের মধ্যে চাপা দিয়ে নিরব অশ্রু বিসর্জন করেন, অতঃপর এক বুক দুঃখ বেদনা বুকে নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম নিজে ওনার স্ত্রীকে কবরে নামান, অতঃপর যখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম উনার কলিজার সবচাইতে কাছের মানুষটাকে আল্লাহর কাছে সপে দেন তখন তিনি বিবি খাদিজার কবরের সামনে দাঁড়িয়ে আল্লাহর কাছে ওনার মাগফেরাতের দোয়া করেন,
হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা ছিলেন এমন এক রমণী যার কথা স্মরণ করে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম তাঁর অন্যান্য স্ত্রীদের কে উদ্দেশ্য করে বলতেন তোমরা তো হচ্ছ আমার সুখের সময় এর সঙ্গী কিন্তু বিবি খাদিজা ছিল এমন এক রমণী যিনি ছিলেন আমার দুখের দিনের সঙ্গী,
বিবি খাদিজার পক্ষ থেকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে এমন একটি উপহার প্রদান করা হয়েছিল যাকে দেখেই সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম নিজের মনকে প্রশান্ত করতেন, আর তিনি ছিলেন হযরত খাদিজা রাদিয়াল্লাহু তালা আনহার উদর থেকে জন্মগ্রহণকারী আরেক মহীয়সী নারী মা ফাতেমা, যাকে বলা হয়েছে সমস্ত জান্নাতী রমণীর সরদার
0 Comments