Header Ads Widget

Responsive Advertisement

যে কারণে ফেরাউন তার স্ত্রী ও এক মহিলাকে হত্যা করেছিলো





আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।

প্রিয় দর্শক ,,

অবিচলতার এক অনুপম আদর্শ সম্বলিত, ধরিত্রীর রমণীকুলের এক সম্মানিত নারী।  তিনি আল্লাহর প্রিয় বান্দি আছিয়া (আ.)। তখনকার যুগের সবচেয়ে অত্যাচারী বাদশাহ, আল্লাহর দুশমন ফেরাউনের স্ত্রী। রাজপ্রসাদে দাস-দাসীদের সেবায় সুখের গতিতেই চলছিল তার জীবন। মুকুটবিশিষ্ট সম্রাজ্ঞীর পদে ছিলেন অভিসিক্ত। ফেরাউনের সাম্রাজ্য আর ক্ষমতার অংশীদারিত্ব তার চরিত্রকে করতে পারেনি কলুষিত। হননি সামান্যও প্রভাবিত। বরং হকের ওপর ছিলেন অটল-অবিচল। কারণ আল্লাহ তাকে ঈমানি আলো দিয়ে পথ দেখিয়েছেন। তিনিই ছিলেন অত্যাচারী ফেরাউনের কবলে থেকেও মুসা (আ.) এর বেঁচে থাকার উসিলা।


আজকের ভিডিওতে আমরা আলোচনা করব,,যে কারণে ফেরাউন তার স্ত্রী ও এক মহিলাকে হত্যা করেছিলো

প্রিয় দর্শক ,,

একদিন ফেরাউনের মেয়ের চুল আঁচড়ানোর সময় একজন মহিলার হাত থেকে চিরুনি পড়ে যায়। মাটি থেকে চিরুনি তোলার সময় তিনি পড়লেন- বিসমিল্লাহ (আল্লাহর নামে)। তাঁর মুখে এমন অদ্ভুত শব্দ শুনে মেয়েটি বললো, “আমার বাবার নামে?”

তিনি বলিষ্ঠ কণ্ঠে বললেন, “না। আমার রব এবং তোমার বাবার রব হলেন আল্লাহ।”

মেয়েটি বললো, “আমি কিন্তু বাবাকে বলে দেবো?”

“বলো।”

মেয়েটি ফেরাউনকে বললে ফেরাউন এসে জিজ্ঞেস করলো, “তুমি নাকি আমাকে ছাড়াও আরেকজনকে রব মানো?”

ফেরাউনের মুখের উপর মহিলা বললেন, “হ্যাঁ, আমার এবং তোমার রব হলেন আল্লাহ!”

মহিলার এমন স্পর্ধা রেখে ফিরাউন ভাবলো, এটাকে সমূলে বিনাশ করতে হবে। সে একটা পাতিলে তেল গরম করার নির্দেশ দিলো এবং মহিলাকে বললো, “তুমি আমার উপর ঈমান না আনলে আমি তোমাকে এবং তোমার সকল সন্তানকে এটার মধ্যে পুড়িয়ে দগ্ধ করে হত্যা করবো।”

আল্লাহর উপর ঈমান আনা সেই মহিলা বললেন, “তবে আমার একটা অনুরোধ আছে। আমার আর সন্তানের হাড়গুলো একত্র করে দাফন করো।” ফেরাউন কথা দিলো। ফেরাউনের সৈন্যসামন্তরা একে একে ঐ মহিলা সহ তার সকল সন্তানকে টগবগে উত্তপ্ত তেলের পাতিলে নিক্ষেপ করলো।


ফেরাউন চেয়েছিলো উদাহরণ দিয়ে ঈমানের আলো নিভিয়ে দিতে। তার এই নির্মম শাস্তি দেখে যাতে আর কেউ ঈমান আনার সাহস না পায়। কিন্তু, হিতে বিপরীত হয়।

সেই রাতেই আসিয়া (আ:) ফেরাউনের কাছে গিয়ে বলেন, “আমি তোমার উপর ঈমান আনি না, আমি ঈমান আনলাম আল্লাহর উপর।”

নিজের স্ত্রীর এমন উদ্ধত আচরণ দেখে ফেরাউন বললো, “তুমি কি জানো, আমি তোমাকে কী শাস্তি দেবো?”

আসিয়া (আ:) বললেন, “আমি জানি। কিন্তু, আমি কোনো পরোয়া করি না!”

ফেরাউন প্রথমে স্ত্রীর খাদ্য-পানীয় বন্ধ করলো, তবুও কাজ হলো না। এক পর্যায়ে শুরু করলো শারীরিক নির্যাতন। নির্যাতনের মুখে আসিয়া (আ:) আল্লাহর কাছে দু’আ করলেন-

“ও আমার রব! আপনার কাছে আমার জন্য জান্নাতে একটি বাড়ি নির্মাণ করুন এবং আমাকে ফেরাউন ও তার কর্ম হতে নাজাত দিন। আর আমাকে নাজাত দিন জালিম সম্প্রদায় হতে।” [সূরা আত-তাহরীম- ৬৬:১১]

ফেরাউন স্ত্রীর ঈমানের দৃঢ়তা দেখে রাগে গজগজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে সে নির্দেশ দিলো, “একটা বড়ো পাথর এনে ওর মাথায় ছুঁড়ে মারো।”

পাথর এনে যখন আসিয়ার (আ:) মাথায় ছুঁড়ে মারা হচ্ছিলো, তখন তিনি আকাশের দিকে তাকান। আল্লাহ জান্নাতে তাঁর বাড়িটি দেখান। পাথরটি ছুঁড়ে মারার আগেই তাঁর রূহ বের হয়ে গেলো। যখন পাথরটি তাঁর উপর এসে পড়লো, তার আগেই তিনি শাহাদাতবরণ করেন। [তাফসীরে আত-তাবারী: ২৩/৫০০]

অনেক মেয়ে-নারী আছেন যারা পরিবারে দ্বীন পালনে বাধার সম্মুখীন হোন। পর্দা করতে চাইলে তাদেরকে বাধা দেয়া হয়, পরিবার থেকে কটু কথা শুনতে হয়। তাদের জন্য সবচেয়ে বড়ো উদাহরণ হলেন আসিয়া (আলাইহাস সালাম)।

তাঁর দ্বীন পালনের ঘটনাকে আল্লাহ কুরআনে বলেন,

“মুমিনদের জন্য উদাহরণ।” [সূরা আত-তাহরীম- ৬৬:১১]


Post a Comment

0 Comments