Header Ads Widget

Responsive Advertisement

জান্নাতের দরজা সর্বপ্রথম কে খুলবে ?? কি বলছে ফেরেশতা



আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।

প্রিয় দর্শক ,,

জান্নাত হচ্ছে নেককার মানুষের শেষ ও চিরস্থায়ী আবাসস্থল। মানুষ সেখানে প্রবেশ করার পর আর বের হওয়ার প্রয়োজন হবে না। কিন্তু সর্ব প্রথম জান্নাতে প্রবেশকারী কে? যিনি জান্নাতের শুভ উদ্বোধন করবেন! তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। এ ব্যাপারে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে হাদিস বর্ণিত হয়েছে-


নয়নাভিরাম জান্নাতে সর্বপ্রথম কে প্রবেশ করবে? এ বিষয়ে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘আমি সর্বপ্রথম জান্নাতের দরজায় টোকা দেব।’ অন্য হাদিসে তিনি বলেন, ‘আমি জান্নাতের দরজায় এসে দরজা খুলতে বলব। তখন দারোয়ান বলবে, কে তুমি? আমি বলব, মোহাম্মদ। তখন সে বলবে, হ্যাঁ, আপনার ব্যাপারে আমাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেন আপনার আগে কারও জন্য জান্নাতের দরজা না খুলি।’ (মুসলিম)।


আমাদের প্রিয়নবী (সা.) কেবল নিজে প্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবেন না। বরং সঙ্গে নিজের উম্মতকেও নেবেন। পৃথিবীতে রাসুল (সা.)-এর উম্মত সর্বশেষ হলেও তারাই সবার আগে জান্নাতে যাওয়ার সৌভাগ্য লাভ করবে। এটি উম্মতে মোহাম্মদির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননা। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘দুনিয়ায় সর্বশেষ আসা আমরাই সর্বপ্রথম হব। মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম আমরাই জান্নাতে প্রবেশ করব। অন্যরা আমাদের কিতাব পেয়েছে। আর আমরা সবার পরে কিতাব পেয়েছি।’ (বোখারি, মুসলিম ও নাসায়ি)।


উম্মতে মোহাম্মদির মধ্যে সর্বপ্রথম জান্নাতে প্রবেশ করবেন আবু বকর (রা.)। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল ইরশাদ করেছেন, ‘জিবরাইল এসে আমার হাত ধরে জান্নাতের দরজা দেখাল, যে দরজা দিয়ে আমার উম্মত জান্নাতে প্রবেশ করবে। তখন আবু বকর (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, আমিও আপনার সঙ্গে থাকব যেন জান্নাতের দরজা দেখতে পারি। তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘হে আবু বকর, শুনে রাখো, আমার উম্মাতের মধ্যে সর্বপ্রথম তুমি জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (আবু দাউদ ৪৬৫২)


অপর হাদিসে দারিদ্র্য মুহাজিররা ধনীদের ৪০ বছর আগে জান্নাতে প্রবেশের কথা বর্ণিত হয়েছে। আবদুল্লাহ বিন আমর (রা.) বলেন, এক দিন আমি মসজিদে বসে ছিলাম। দারিদ্র্য মুহাজিরদের একটি দলও মসজিদে বসা ছিল। এমন সময় রাসুল (সা.) এসে তাদের কাছে বসে বললেন, ‘দরিদ্র্য মুহাজিররা সুসংবাদ গ্রহণ করুক। তাদের চেহারা উজ্জ্বল হোক। কারণ তারা ধনীদের ৪০ বছর আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমি দেখলাম, তাদের রং পরিবর্তন হয়ে উজ্জ্বল হয়ে গেল। আমারও আশা জাগল, আমি যদি তাদের মধ্যে হতাম!’ (দারেমি, ২৭২১)


জান্নাতে প্রবেশ করে তাদের অবস্থা কেমন হবে তারও বর্ণনা রাসুল (সা.) আমাদের জানিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘সর্বপ্রথম যে দল জান্নাতে প্রবেশ করবে তারা পূর্ণিমার চাঁদের মতো উজ্জ্বল বর্ণের হবে। তারপরের দলটি হবে আকাশের সবচেয়ে বেশি আলো সম্পন্ন তারকার মতো। তাদের থুতু থাকবে না। প্র¯্রাব ও পায়খানা হবে না। সেখানে তাদের পাত্রগুলো স্বর্ণের হবে। চিরুনি হবে স্বর্ণ ও রুপার তৈরি। মেশক হবে তাদের ঘাম। তাদের সবার সঙ্গে দুজন করে স্ত্রী থাকবে। অতিশয় লাবণ্যময় হওয়ায় মাংসের ওপর থেকে তাদের হাড়ের মগজ দেখা যাবে। তাদের মধ্যে কোনো বিরোধ ও বিদ্বেষ থাকবে না। সবার অন্তর একজন ব্যক্তির অন্তরের মতো হবে। সবাই সকাল-সন্ধ্যা আল্লাহর তাসবিহ পাঠ করবে।’ (মুসলিম ২৮৩৪)


সুতরাং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উপর নাজিলকৃত বিধান এবং তাঁর সুন্নাতকে আঁকড়ে ধরুন। তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে জান্নাতের অধিবাসী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করুন। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হিদায়াত দান করে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সঙ্গী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।


Post a Comment

0 Comments