আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
প্রিয় দর্শক ,,
জান্নাত বা বেহেশত নিয়ে আমাদের চিন্তার শেষ নেই। জান্নাত নিয়ে অনেক কৌতূহলও হৃদয়ের মাঝে উদয় হয়। ওখানের জীবন কেমন হবে, কী খাব, কেমন জীবনসঙ্গী পাব ইত্যাদি নানারকম বিষয় নিয়ে ভাবেন অনেকে। সেই কৌতুহল নিবারণের জন্যই আজকের বিডিও।
আজকের ভিডিওতে আমরা আলোচনা করব,,জান্নাতিদের প্রথম খাবার কি হবে??
রাসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর গোলাম সাওবান রাযিয়াল্লাহু তা’আলা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট দাঁড়িয়ে ছিলাম। ইতোমধ্যে ইহুদীদের পাদ্রীদের মধ্য থেকে একজন পাদ্রী আসল এবং জিজ্ঞেস করল, “যে দিন আকাশ ও যমিন প্রথম পরিবর্তন করা হবে তখন মানুষ কোথায় থাকবে?” রাসূলুল্লাহ্ সল্লল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “পুলসেরাতের নিকটবর্তী এক অন্ধকার স্থানে”। অতঃপর ইহুদী আলেম জিজ্ঞেস করল, “সর্ব প্রথম কে পুলসিরাত পার হবে?” তিনি বললেন, “গরীব মুহাজিরগণ (মক্কা থেকে মদীনার হিযরতকারী)”। ঐ ইহুদী পাদ্রী আবার জিজ্ঞেস করল, “জান্নাতীরা জান্নাতে প্রবেশ করার পর সর্ব প্রথম তাদেরকে কী খাবার পরিবেশন করা হবে?” রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “মাছের কলিজা”। ইহুদী জিজ্ঞেস করল, “এর পর কী পরিবেশন করা হবে?” রাসূলুল্লাহ সল্লল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “এরপর জান্নাতীদের জন্য জান্নাতে পালিত গরুর গোশত পরিবেশন করা হবে”। এরপর ইহুদী জিজ্ঞেস করল, “খাওয়ার পর পানীয় কী কী পরিবেশন করা হবে?” রাসূলুল্লাহ সল্লল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “সালসাবীল নামক ঝর্ণার পানি”। ইহুদী পাদ্রী বলল, “তুমি সত্য বলেছ…”।
মহানবী সা: জান্নাতিদের খাবার সম্পর্কে আরো বেশ কিছু তথ্য হাদিসে বর্ণনা করেছেন। এখানে তার কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:
জান্নাতিদের খাবারগুলো ঢেঁকুর এবং মিশক্ ঘ্রাণযুক্ত ঘর্ম দ্বারা নিঃশেষ হয়ে যাবে। (বুখারি ও মুসলিম)
জান্নাতিরা সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে ডুবে থাকবে। কোনো হতাশা ও দুশ্চিন্তা থাকবে না। তাদের পোশাক পুরনো হবে না। (মুসলিম)
জান্নাতবাসীরা সব সময় জীবিত থাকবেন। তাঁরা বৃদ্ধ হবেন না এবং তাঁরা হবেন চিরযৌবনা। (মুসলিম)
জান্নাতে বিভিন্ন প্রজাতির ফলমূল ও শাকসবজি সরবরাহ করা হবে। এর মধ্যে খেজুর, লেবু, আঙ্গুর, ডালিম, কুল ও কলা অন্যতম। ফলের আকার ও আয়তন অনেক বড়। ফলের অভ্যন্তরে দানা থাকবে না। কতিপয় ফলমূল দেখলে অনেকে বলবে, এগুলো তো আমরা পৃথিবীতে খেয়েছি। কিন্তু যখন খাবে তারা বুঝতে পারবে এগুলোর স্বাদ ও গন্ধ সম্পূর্ণ আলাদা। পৃথিবীতে নেই এমন ফলমূলও জান্নাতে পাওয়া যাবে। গাছ থেকে কিছু ফল ছিড়লে মুহূর্তে আবার গাছ ভর্তি হয়ে যাবে। জান্নাতে ফলের কোনো মৌসুম নেই। সবসময় ফলফলাদি পাওয়া যাবে এবং খেতে থাকবে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আর যারা ঈমান এনেছে এবং নেক কাজ করেছে তুমি তাদের সুসংবাদ দাও যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতসমূহ, যার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত হবে নদীসমূহ। যখনই তাদের জান্নাত থেকে ফল খেতে দেওয়া হবে, তারা বলবে, ‘এটাই তো পূর্বে আমাদের খেতে দেওয়া হয়েছিল।’ আর তাদের তা দেওয়া হবে সাদৃশ্যপূর্ণ করে এবং তাদের জন্য থাকবে পবিত্র স্ত্রীগণ এবং তারা সেখানে হবে স্থায়ী।
তারা (জান্নাতিরা) থাকবে কাঁটাবিহীন কুলগাছ, কাঁদিপূর্ণ কলাগাছের নিচে, বিস্তৃত ছায়ায়, সদা প্রবাহিত পানির পাশে, থাকবে প্রচুর ফলমূল, যা শেষ হবে না এবং নিষিদ্ধও হবে না। (সুরা আর-রহমান : ৬৮; সুরা মুহাম্মদ : ১৫; সুরা বাকারা : ২৫; সুরা ওয়াকেয়া : ২৮-৩৩)
0 Comments