আসসালামুআলাইকুম বন্ধুরা আশা করি আপনারা সকলেই ভাল আছেন।
একজন সাহাবীর জানাযায় এক লক্ষ 40 হাজার ফেরেশতা শরিক হয়েছিলেন । কারণ তিনি একটি আমল সর্বদাই করতেন । আর সেই আমলটি আপনি আমি সকল মুসলমানরা জানি, কি সেই আমল?? যার বদৌলতে হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম সহ এতগুলো ফেরেশতা উনার জানাজায় উপস্থিত ছিলেন?? ঘটনাটি জানতে হলে ভিডিওটি শেষ পর্যন্ত দেখুন।
একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এক সাহাবীকে মসজিদের ইমাম হিসেবে নিযুক্ত করলেন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম মসজিদে নববীতে ইমামতি করতেন । মসজিদের ইমাম প্রত্যেক সালাতের প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাস পাঠ করতেন। একদিন মসজিদের মুসল্লিরা এই নিয়ে কথা বলতে শুরু করলেন। ইমাম সাহেব কেন এ কি সুরা দিয়ে সালাত শেষ করেন । এই নিয়ে তারা ভীষণ ক্ষুব্ধ । তারা সবাই ইমামের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,, ইমাম সাহেব !!আপনি কেন প্রতি রাকাতে সূরা ইখলাস দিয়ে সালাত পরেন??ইমাম সাহেব বললেন, আমি আপনাদের কথায় এখানে ইমামতি করি না। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম আমাকে এই মসজিদের ইমাম হিসেবে নিযুক্ত করেছেন। আমি এভাবেই নামাজ পড়াবো কিন্তু তিনি যদি আমাকে ইমামতি থেকে বিদায় দেন তবে আমি অব্যাহতি নিলাম ।
এবার সবাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট উপস্থিত হলেন ।সব কিছু বলার পর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম ইমাম সাহেবকে ডেকে পাঠালেন। ইমাম সাহেব আসলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন, ঘটনাটি সত্যি?? সাহাবী বললেন জি। রাসূল আল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন তুমি কেন শুধু সূরা ইখলাস দিয়ে নামাজ পড়াও?? ইমাম সাহেব বললেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ আমার ভালো লাগে এই সূরাটি পড়তে ।এই সূরাকে আমি ভালোবাসি। এই সূরাতেই আমার আল্লাহর পরিচয় বলা হয়েছে । আল্লাহর কথা এই সূরায় স্পষ্ট ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে । এই শুরায় প্রতিটি আয়াতেই আমার রবের পরিচয় । এজন্য আমি এই সূরাটি পাঠ করতে ভালোবাসি। তার কথা শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বললেন ,যেভাবে তুমি নামাজ পড়াতে সেভাবেই পড়াবে । কেননা এই যে তুমি সূরা ইখলাস কে ভালোবাসো এই ভালোবাসার কারণে আল্লাহতালা তোমাকে কেয়ামতের দিন উত্তম মর্যাদা দান করবেন । এই সূরার প্রতি তোমার ভালোবাসার জন্য তোমাকে জান্নাত দান করবেন। সুবহানাল্লাহ!!
একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম তাবুকের যুদ্ধে গেলেন, যুদ্ধে খ্রিস্টানদের সৈন্যসংখ্যা ছিল প্রায় 40,000 । খ্রিস্টানদের নেতা যখন খবর পেল যে রাসূল সাঃ যুদ্ধ করতে এসেছেন। সে পালিয়ে গেল ।এভাবেই মহান আল্লাহ তাআলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে যুদ্ধ ছাড়াই জয় দান করেন। সুবহানআল্লাহ!! যুদ্ধের ময়দানে দাঁড়িয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করলেন । হঠাৎ তিনি দেখলেন জিব্রাইল আঃ আকাশ থেকে নামছেন । রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম খেয়াল করছেন,, জিবরাঈল আলাইহিস সালামের পাখনার কারণে সূর্যের আলো পৃথিবীতে পড়ছে না । তিনি তাকিয়ে দেখলেন জিব্রাইল আলাই সালাম একা আসেন নি, বরং তার সঙ্গে হাজার হাজার ফেরেশতা নেমে এলেন । রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম জিব্রাইল আলাই সালাম কে জিজ্ঞেস করলেন,, হে জিবরাঈল!! আপনার সাথে কতজন ফেরেশতার এসেছেন? জিব্রাইল আলাই সাল্লাম বললেন,, এক লক্ষ 40 হাজার। জিব্রাইল আলাইহি সাল্লামি আবারো রাসুল সাঃ কে বললেন আপনি যুদ্ধের ময়দানে দাঁড়িয়ে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করেছেন। অন্যদিকে মদিনায় আপনার প্রিয় সাহাবী ইন্তেকাল করেছেন । আপনি কি তার জন্য গায়েবানা জানাজা পড়াবেন না ?? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম তার বাকি সাহাবীদের অজু করে আসতে বললেন। সাহাবীদের নিয়ে গায়েবানা জানাজায় দাড়ালেন। জিব্রাইল আলাই সালাম সাহাবীদের পেছনে এক লক্ষ 40 হাজার ফেরেশতা নিয়ে জানাজায় অংশ গ্রহণ করলেন। রাসূল সাল্লাহু আলাই সালাম জিব্রাইল আমাকে জিজ্ঞেস করলেন,, আপনাকে এত ফেরেশতা নিয়ে কখনো জানাজায় অংশগ্রহণ করতে দেখিনি। মুয়াবিয়া এমন কি আমল করেছিল ??যা আল্লাহর আরশ পর্যন্ত পৌঁছেছে??
আর আপনি এক লক্ষ 40 হাজার ফেরেশতা নিয়ে জানাজায় উপস্থিত হয়েছেন?? আমার মুয়াবিয়া্র এমন কি গোপন আমল ছিল?? আমাকে বলুন।
জিব্রাইল আলাই সালাম বলেন,, তিনি একটি বিশেষ আমল করতেন।
তা হল আপনার প্রিয় সাহাবী উঠতে-বসতে চলতে-ফিরতে সবসময়ই সূরা ইখলাস পাঠ করতেন। সুবহানাল্লাহ !!
প্রিয় বন্ধুরা আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে চাইলে আপনাদেরও সূরা ইখলাস কে মনের মধ্যে গেঁথে নিতে হবে । উঠতে-বসতে চলতে-ফিরতে সূরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদের এই বিশেষ আমল করার তৌফিক দান করুন আমিন ।
0 Comments