আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।

সুপ্রিয় দর্শক মন্ডলী আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন।    

প্রিয় দর্শক ,,

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, মানবতার মুক্তির দূত, সাইয়্যেদুল মুরসালিন খাতামুননাবিয়ীন হযরত মুহাম্মদ (সা:) কে আল্লাহ ছোবাহানাহু তায়ালা বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপ এ পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে বলেছেন- তোমাদের জন্য রাসুলের জীবনীর মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। তাঁর প্রতিটি কথা, কাজ, অনুমোদন, নির্দেশনা, আদেশ, নিষেধ ও উপদেশ দুনিয়া-আখেরাতের কল্যাণের বার্তাবাহী। তিনি গোটা মানব জাতির শিক্ষক। তাঁর সে কালজয়ী আদর্শ ও অমিয়বাণী দ্যুাতি ছড়িয়ে পথপদর্শন করেছে যুগ যুগান্তরে, আলোকিত হয়েছে মানবমÐলী।

প্রতিটি মাখলুককেই কাল কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহর কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। কিয়ামতের ময়দানের সেই কঠিন মুহূর্তের বর্ণনা দিতে গিয়ে রাসুল (সা.) বলেন, কিয়ামতের দিন মানবমÐলীকে লাল শ্বেত মিশ্রিত এমন এক সমতল ভূমিতে একত্র করা হবে, যেন তা পরিচ্ছন্ন আটার রুটির মতো। ওই জমিনে কারো (বাড়িঘরের বা অন্য কিছুর) চিহ্ন থাকবে না। (বুখারি ও মুসলিম)

কিয়ামতের দিনটি প্রচÐ উত্তপ্ত থাকবে। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, বিচার দিবসে সূর্যকে মানুষের কাছে আনা হবে, সমস্ত মানুষ থাকবে পেরেশান, তা হবে তাদের থেকে এক ফরসাখ (তিন মাইল) দূরে। ব্যক্তির আমল অনুযায়ী ঘামের মধ্যে অবস্থান করবে। কারো ঘাম হবে টাখনুসমান, কারো হাঁটুসমান, কারো কোমরসমান, কারো মুখসমান। (মিশকাত, পৃষ্ঠা : ৪৮৩)


পূর্বেই বলা হয়েছে যে হাশরের মাঠে কোথাও এক বিন্দু ছায়া থাকবে না।  অপরদিকে মাথার অর্ধ হস্ত উপরে সূর্য অবস্থান করবে।  সূর্যের প্রখর তাপে সকলের মাথার মগজ টগবগ করতে করতে ফুটতে থাকবে।  সেই সময়ে একটু ছায়ার জন্য মানুষ আল্লাহর নিকট কত করুণ নিবেদন জানাবে । সেই কঠিন দিনে 7 শ্রেণীর লোক কে আল্লাহ তায়ালা আরশের ছায়ায় আশ্রয় দান করবেন । এ সম্বন্ধে হযরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে দিন কোন প্রকারের ছায়া থাকবে না ,সেদিন সাত শ্রেণীর লোককে আল্লাহ তায়ালা তার আপন ছায়ায় আশ্রয় প্রদান করবেন।


হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কেয়ামতের দিন আল্লাহ্ তাআলা সাত শ্রেণীর ব্যক্তিকে তাঁর আরশের ছায়া দান করবেন। যেদিন তাঁর ছায়া ব্যতিত আর কোনো ছায়া থাকবে না। তাঁরা হলেন-

> ইমামুন আদেলুন, ন্যায়পরায়ণ শাসক।

> ওই যুবক, যার যৌবন আল্লাহর ইবাদাতে অতিবাহিত করে।

> ওই (নামাজি) ব্যক্তি, যার অন্তর মসজিদের সাথে ঝুলন্ত থাকে।

> ওই ব্যক্তি, যে নির্জনে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং তার চোখ থেকে (আল্লাহর ভয়ে) পানি ঝরে।

> সেই দুই ব্যক্তি, যারা একে অপরকে শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ভালোবাসে।

> ওই ব্যক্তি, যাকে কোনো প্রভাবশালী সুন্দরী নারী (ব্যভিচারের উদ্দেশ্যে) আহবান করে, আর সে তখন বলে, আমি আল্লাহকে ভয় করি।

> ওই ব্যক্তি, যে নিজের দানকে এমনভাবে গোপন করে যে, তার বাঁ হাত জানে না ডান হাত কী দান করল অর্থাৎ গোপনে দানকারী ব্যক্তি। (বুখারি, মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ, মুয়াত্তা মালেক, তিরমিজি, নাসাঈ)



সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত উল্লেখিত সাত শ্রেণীর লোকের গুণ অর্জন করা। কেয়ামতের কঠিন ভয়াবহতার সময় আল্লাহর আরশের রহমতের ছায়া লাভ করা।

এ সাতটি কাজ শুধু পরকালের ভয়াবহতার সময় উপকারি এমন নয়, এ কাজগুলো দুনিয়াতে করলেও এর আমলকারীর জন্য রয়েছে অফুরন্ত নেয়ামত, সম্মান ও শান্তি।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দুনিয়ার শান্তি, সম্মান ও মর্যাদা লাভের পাশাপাশি কেয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের রহমতের ছায়া লাভে এ দায়িত্ব ও আমলগুলো যথাযথভাবে পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।