আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।

সুপ্রিয় দর্শক মন্ডলী আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন।    

প্রিয় দর্শক ,,

আজকের ভিডিওতে আমরা আলোচনা করব,, কেমন হবে  বিচার দিবস,, জান্নাত  ও জাহান্নাম ???

হাশরের ময়দান তথা বিচার দিবস এর বর্ণনা দিতে গিয়ে মহানবী (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন মানবজাতিকে লাল-শ্বেত মিশ্রিত এমন এক সমতল ভূমিতে একত্র করা হবে, যেন তা পরিচ্ছন্ন আটার রুটির মতো। ওই জমিনে কারো (বাড়িঘরের বা অন্য কিছুর) চিহ্ন থাকবে না। ’ (বুখারি ও মুসলিম)

হাশরের ময়দানের ভূমি সম্পর্কে কোরআনে এসেছে, ‘(বিচার দিবসে) আল্লাহ জমিনকে এমন সমতল মসৃণ ধূসর ময়দানে পরিণত করবেন যে, তুমি তাতে কোনো বক্রতা ও উচ্চতা দেখতে পাবে না। ’ (সুরা তাহা, আয়াত : ১০৬-১০৭)

কেয়ামতের দিনটি প্রচণ্ড উত্তপ্ত থাকবে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘বিচার দিবসে সূর্যকে মানুষের কাছে আনা হবে, তা হবে তাদের থেকে এক ফরসাখ (তিন মাইল) দূরে। ব্যক্তির আমল অনুযায়ী ঘামের মধ্যে অবস্থান করবে। কারো ঘাম হবে টাখনু সমান, কারো হাঁটু সমান, কারো কোমর সমান, কারো মুখ সমান (মিশকাত, পৃষ্ঠা ৪৮৩)


জান্নাত কেমন হবে??

জান্নাত অর্থ—বাগান, উদ্যান, ঢাকা, আচ্ছন্ন ইত্যাদি। জান্নাত বৃক্ষ তরুলতায় আবৃত হওয়ার কারণে একে জান্নাত বলা হয়। জান্নাত এমন শান্তির জায়গা, যার বর্ণনা দেওয়া কোনো মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। জান্নাতে রয়েছে এমন সুখ-শান্তি, যা কোনো হৃদয় কল্পনা করেনি এবং কোনো চোখ দেখেনি। জান্নাতে থাকবে উন্নত মানের আসন। আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘জান্নাতিদের তাদের ধৈর্যের প্রতিদানস্বরূপ প্রাসাদ দেওয়া হবে। তাদের সেখানে অভিবাদন ও সালাম দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হবে। তথায় তারা স্থায়ীভাবে থাকবে। আশ্রয়স্থল ও আবাসস্থল হিসেবে তা কতই না উত্তম।’ (সুরা : ফুরকান, আয়াত : ৭৫-৭৬)

জান্নাতের সুঘ্রাণ ৫০০ মাইল দূর থেকে পাওয়া যাবে। জান্নাতিরা নানা ধরনের ফলফলাদি ভক্ষণ করবে। তারা হবে ৬০ হাত লম্বা এবং ১৪ তারিখের চাঁদের মতো উজ্জ্বল। তাদের উন্নত মানের পোশাক পরিয়ে দেওয়া হবে। আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘জান্নাতে জান্নাতিদের জন্য ফলমূল ও কাঙ্ক্ষিত সব কিছু থাকবে।’ (সুরা : ইয়াসিন)


জাহান্নাম কেমন হবে??

জাহান্নামিরা আগুনের রাজ্যের ভেতর প্রচণ্ড ক্ষুধা অনুভব করবে। তারা খেতে চাইবে। আল্লাহ তাদেরকে খেতে দেবেন জাক্কুম নামের একধরনের বিষাক্ত গাছ। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয় জাক্কুম গাছ পাপীদের খাবার হবে, গলিত তামার মতো পেটের ভেতর ফুটতে থাকবে, ফুটন্ত পানির মতো।’ (সুরা দুখান)। কাঁটাযুক্ত এই গাছ এতটাই তিতা হবে যে, ভেতরের নাড়িভুঁড়ি সব বেরিয়ে আসবে। কাঁটা গিয়ে গলায় আটকে থাকবে, এদিক-সেদিক যাবে না তখন তারা পিপাসার্ত হয়ে পানি চাইবে। যখন তারা পানি চাইবে তাদের প্রচণ্ড গরম পানি দেওয়া হবে। পিপাসার তীব্রতায় তারা গরম পানিই খেতে থাকবে। গরম পানির প্রভাবে তাদের ভেতরের নাড়িভুঁড়ি সব গলে পায়খানার রাস্তা দিয়ে বেরিয়ে আসবে। সেখানে পুঁজ মেশানো পানি পান করানো হবে। ঢোক গিলে তা পান করবে আর তা গলার ভেতরে ঢুকবে না। তারা গরম পানি পান করার পর তা ফেলে দিতে চাইবে, কিন্তু তা আর সম্ভব হবে না। গরমের তীব্রতায় তাদের মুখের চামড়া খসে পড়ে যাবে। দুনিয়াতে কারও শরীর থেকে পুঁজ বের হলে তা কত দুর্গন্ধময় হয়। সে পুঁজই যখন তাদেরকে খেতে দেওয়া হবে তখন অবস্থা কত ভয়াবহ হবে! কিন্তু পিপাসায় তারা এতটাই কাতর হবে যে, এগুলো পান না করে ছাড়া পাবে না। এ ধরনের অসহনীয় শাস্তি জাহান্নামে দেওয়া হবে। জাহান্নামের এ ভয়াবহ আজাব থেকে দূরে থাকতে হলে আল্লাহর দরবারে সঠিকভাবে তওবা করতে হবে। ছোট-বড় সব ধরনের পাপ থেকে বেঁচে

থাকতে হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ভয়াবহ ও নির্মম এ জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিন।