আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ ,,,,
সুপ্রিয় দর্শক মন্ডলী আশা করি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অশেষ মেহেরবানি ও দয়ায় আপনারা সবাই ভাল আছেন।
(True Search Bangla) ট্রু সার্চ বাংলা,,,,,,,, ইউটিউব চ্যানেলের পক্ষ থেকে আপমিাদেরকে জানাই অফুরন্ত ভালোবাসা।
প্রিয় দর্শক,, কবর হলো আরবি শব্দ,, যার অর্থ হলো গোরস্থান বা সমাধিস্থল। আর পরিভাষায়,,, মানুষের মৃত্যুর পর যেখানে দাফন করা হয়,, বা মাটি দেওয়া হয় । তাকে কবর বলে। মৃত্যুর পর কবরই হলো অন্তিম ঠিকানা। এবং কবর পরকালের প্রথম ঘাটি ।
তাই আজকের ভিডিওতে আমরা কবর জগতের প্রশ্ন বিষয় এবং উত্তর মালা নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ। যা শুনে আপনি অনেক কিছু শিখতে পারবেন ।
হযরত ইবনে সালাম রাদিয়াল্লাহু বলেন,, আমি একদা হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট আরজ করলাম,, কবরে মুনকার নাকিরের পূর্বে কোন ফেরেশতা আসে কিনা??? তিনি ইরশাদ করলেন,, ওহে ইবনে সালাম!!! সূর্যের ন্যায় দিপ্তিময় এক ফেরেশতা তাদের পূর্বে কবরে এসে মৃত ব্যক্তিকে জাগ্রত করবেন। এবং তার পাপ পুণ্য লিপিবদ্ধ করতে বলবেন। মৃত ব্যক্তি তখন নিবেদন করবে,,, আমি কি দিয়ে লিখবো?? আমার কাছে তো কোন কাগজ, কলম,কালি কিছুই নেই । ফেরেশতা বলবে,, তোমার আঙ্গুলকে কলম এবং থুথু কে কালি হিসেবে ব্যবহার কর। বান্দা বলবে কাগজ কোথায় পাব??
তখন ফেরেশতা কাফনের কাপড় থেকে কিছু কাপড় ছিড়েদিয়ে বলবে,, এখানে লিখ।
বান্দা তখন দ্বিধাহীনভাবে পূণ্যসমূহ লিখতে থাকবে। কিন্তু পাপরাশি লিখতে লজ্জায় ইতস্তত হবে। তা দেখে ফেরেশতা ধমক দিয়ে বলবেন,, পৃথিবীতে পাপের কাজ করতে লজ্জিত হও নি,, আর আমার সামনে তা লিখতে লজ্জা বোধ করছ। বলে তাকে প্রহার করতে উদ্যত হবে। তখন সে বান্দা বলবে,,, আমাকে প্রহার করবেন না, আমি সবকিছু লিখে দিচ্ছি । এরপর সে লিখে দিবে। ফেরেশতা তখন উক্ত পাপ-পুণ্যের খতিয়ান মোহরাঙ্কিত করে দিতে বলায়,,,সে বলবে আমার নিকট তো সিল মোহর করার কোন উপকরণ নেই। কিসের সাহায্যে আমি কাজ সম্পন্ন করব??? ফেরেশতা বলবে তোমার মুখ দিয়ে এ কাজকে সমাধান করো। এবং সে তাই করবে। ফেরেশতা তখন সে আমলনামা তার গলায় ঝুলিয়ে দিয়ে প্রস্থান করবেন। এ আমলনামা মহাপ্রলয় দিবস পর্যন্ত তার গলায় ঝুলন্ত অবস্থায় থাকবে । মহান আল্লাহতায়ালা এ ব্যাপারে ঘোষণা করবেন,, এবং আমি প্রত্যেক মানুষের গলায় তার আমলনামা ঝুলানোর ব্যবস্থা করেছি। সূরা বনী ইসরাঈল ,,আয়াত নম্বর 13 । এই ফেরেশতা তখন বিদায় নেওয়ার পরপরই মুনকার নাকির ফেরেশতা আগমন করবেন । হাদিস শরিফে বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত আছে,, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,, কোন ভাল মানুষ মারা যাওয়ার পর যখন তাকে কবরে রাখা হয় ,তখন নীল চক্ষুবিশিষ্ট দুজন কালো বর্ণের ফেরেশতা এসে তাকে বসিয়ে প্রশ্ন করে,, ফেরেশতাদের একজনকে বলা হয় মুনকার অপরজনকে বলা হয় নাকির তারা কবরবাসীর জন্য তিনটি প্রশ্ন করে থাকেন।
প্রথম প্রশ্ন ,,,মান রাব্বুকা??? তোমার রব কে ???যার উত্তর হবে ,,আমার রব আল্লাহ । দ্বিতীয় প্রশ্ন,,, মান দিনুকা??? তোমার দিন কি??? যার উত্তর হবে, আমার দিন হল ইসলাম। তৃতীয় প্রশ্ন,, মান্নাবিয়্যুকা?? তোমার নবীকে?? যার উত্তর হবে,, আমার নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এর পর তাঁর কবরকে প্রশস্ত ও আলোকিত করা হবে । এবং বলা হবে,, তুমি ঘুমিয়ে থাকো । আর কাফের ও মুনাফিকরা সব প্রশ্নের জবাবে ব্যর্থ হয়ে বলবে,, হায় হায় আমি কিছুই জানি না। তখন তাঁর কবরকে জাহান্নামের গর্তে পরিণত করা হবে। এবং সে কবর থেকে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে থাকবে । আল্লাহু আকবার!!! এখন প্রশ্নের বিষয় এই যে,, কবরের তিনটি প্রশ্নের উত্তরে, যদি ওই তিনটি বাক্য বলতে পারি। তাহলে কবরের আজাব মাফ এবং দোযখের আযাবও মাফ। চলুন তাহলে কবরের তিনটি প্রশ্নের তাৎপর্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
রব শব্দের প্রকৃত অর্থ প্রতিপালক। যেহেতু দুনিয়ায় প্রতিপালকের আনুগত্য ও আদেশ পালন করা হয় ,,অতএব রব শব্দের অর্থ মালিক। মানুষ যাকে নিজের প্রতিপালক,, রিজিকদাতা মনে করে,, যার নিকট হতে মান-সম্মান ,,উন্নতি ও শান্তি লাভ করার আকাঙ্ক্ষা করে থাকে। মানুষ যাকে প্রভু অর্থাৎ মালিক রূপে নির্দিষ্ট করে। এবং বাস্তব জীবনে যার আনুগত্য ও আদেশ পালন করে। বস্তুত সেই তাদের রব।
কবরের দ্বিতীয় প্রশ্ন,,, তুমি দিন হিসেবে কোনটা মেনে এসেছ???? এ প্রশ্নের জবাব দিতে হলে দ্বীন সম্পর্কে জানতে হবে। দিন কোন, কোন অর্থে আল-কোরআনে ব্যবহৃত হয়েছে??? আল-কোরআনে দিন মোটামুটি চার প্রকার অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। এক- ধর্ম, দুই-কর্ম,, তিন-জীবন ব্যবস্থা। এবং চার-রাষ্ট্রীয় সংবিধান। এই প্রশ্নের জবাব ,,আমার--- দ্বীন,, ইসলাম। ইসলাম অর্থ আনুগত্য করা,, আত্মসমর্পণ করা,, বিশ্বজগতের একমাত্র স্রষ্টা আল্লাহ রব্বুল আলামীনের প্রতি আন্তরিক বিশ্বাস স্থাপন করা। পরিপূর্ণ আনুগত্য করা এবং নির্দ্বিধায় তার আদেশ নিষেধ মেনে চলা । ও সে অনুযায়ী জীবন-যাপন করার নাম হল ইসলাম। কবর জগতের সর্বশেষ প্রশ্ন,,,,মান্নাবিয়্যুকা?? তোমার নবী কে ছিলেন?? বা তোমার নেতা কে ছিলেন ??তুমি আদর্শ হিসেবে কাকে অনুসরণ করেছিলে?? কেননা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কুরআনে উল্লেখ করেন,,, নিঃসন্দেহে আপনি রাসূলগণের মধ্যে অন্যতম। তাই কবর জগতের এই প্রশ্নের জবাব দিতে হলে,,, বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নীতি ও আদর্শ মেনে নিতেই হবে। এবং তার পরিপূর্ণ আনুগত্যশীল হতে হবে। কারণ,,,, রাসূলের আনুগত্য করা উম্মতের জন্য ফরয। পরিশেষে বলতে চাই কবর হলো ,,,নতুন জগতের চূড়ান্ত প্রবেশ। তাই কবরের আজাব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ,,বেশী বেশী নেক আমল করতে হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কবরে যাওয়ার পূর্বেই আমাদের বেশি বেশি কবরের প্রস্তুতি নেওয়ার তৌফিক দান করুক। এই দুনিয়ার জাঁকজমক,, চাকচিক্য যেন আমাদের পথভ্রষ্ট না করে ফেলে ,,হে রাব্বি জাল জালালি ওয়াল ইকরাম!! আপনি আমাদের আখেরাতমুখী করুন। এবং বেশি বেশি কবরের চিন্তা অন্তরে ধারণ করার তৌফিক দান করুন। আমিন!!! তো প্রিয় দর্শক যারা ভিডিওটি শেষ পর্যন্ত দেখেছেন তারা কমেন্টে আমিন লিখে জানাবেন।
ইসলাম সম্পর্কে আরো জানতে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন আমাদের চ্যানেলটি।
আল্লাহ সুবহানাতায়ালা আমাদের প্রত্যেককেই যেন সুস্থ রাখেন,, ভাল রাখেন। নিরাপদে রাখেন। এই কামনাই আজকের ভিডিওটির এখানেই সমাপ্তি। আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।
0 Comments