আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ।
প্রিয় দর্শক ,,
ইসলামে, হযরত মুহাম্মদ সা . এর পর সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি হযরত আবু বকর রাঃ দুই বছর শাসন শেষে জীবনের শেষ সময়ে খলিফা নির্বাচিত করলেন হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব ( রাঃ ) -কে । প্রথম দিকে বেশ কয়েকজন এতে আপত্তি জানিয়েছিল,,
হযরত উমর ( রাঃ ) এর রাগান্বিত স্বভাবের জন্য । কিন্তু দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে সকলের ধারণা ভুল প্রমাণিত করে ইসলামের সবচেয়ে ক্ষমতাবান ও প্রিয় শাসকে পরিণত হয়েছিলেন তিনি । কুরাইশ বংশে জন্ম নেয়া উমর রাঃ ইসলামের প্রথম দিকে ছিলেন প্রচুর ইসলাম ও মুহাম্মদ ( সাঃ ) বিদ্বেষী । তার ইসলাম গ্রহণের কাহিনি মুসলিম বলতে সবারই জানা । আমি এখানে মূলত তার শাসনকালে তিনি কেমন ছিলেন , শাসক হিসেবে তিনি তার অধীনস্তদের সাথে কেমন ব্যবহার করেছেন , কেমন ছিলো একজন শাসক হিসেবে তার জীবন সেই দিকটি তুলে ধরা চেষ্টা করবো ।
ইনশাল্লাহ।
হযরত উমর ( রাঃ ) প্রশাসনিক কাজে ছিলেন বেশ দক্ষ । এক কথায় তিনি ইসলামি অর্থ ব্যবস্থা , যাকাত ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা এনেছিলেন । অর্থ বিভাগ , বিচার বিভাগের মাধ্যমে তিনি তাঁর সময়কালে সব কিছু একটা সুন্দর আইনের আওতায় এনেছিলেন । ফলে তাঁর সময়ে অপরাধ বোধ যেমন কমে গিয়েছিল তেমনি ধনী গরীবের ব্যবধানও হ্রাস পেয়েছিলো অনেক । একের পর এক যুদ্ধেশেষ সময় চলে আসে । মৃত্যু শয্যাতেও উমর ( রাঃ ) ছিলেন সৎ , আল্লাহ ভীত , আইনের জয় লাভ করে যখন ইসলামি সালাতান বৃদ্ধি করে যাচ্ছিলেন তখন অন্যদিকে তাঁর জীবনের শাসনের অনড় । তিনি চাইলেই তাঁর পুত্রকে পরবর্তী খলিফা নির্বাচন করে যেতে পারতেন । এমন কথা উঠলে উমর বলেছিল , নিশ্চই তোমরা আল্লাহকে খুশি করার জন্য এ কথা বলোনি । পরবর্তী খলিফা নির্ধারণে তিনি যে উপদেষ্টা পরিষদ করে দিয়েছিলেন তাতে সবাই একমত ছিলো । এতে করে বড় ধরনের ফেতনা থেকে বেঁচে যায় মুসলিম উম্মাহ ।
মহান বিজেতা হয়েও অনন্য সাধারন জীবন - যাপন করতেন হযরত উমর ( রাঃ ) যিনি নিজে হেঁটেছেন খালি পায়ে । তিনি ছিলেন মহান বিজেতা ,,যে শাসন করেছেন অর্ধ পৃথিবী । ইসলামের দ্বিতীয় খলিফায়ে রাশেদ হযরত উমর ( রাঃ ) ছিলেন সবার চোখের মণি । যার ইসলাম গ্রহণে স্বয়ং মুহাম্মদ সা . দোয়া করেছিলেন । তিরমিজি হাদিস নং ৩৬৮১ তে আছেঃ ‘ হে আল্লাহ ! আবু জাহল ইবনে হিশাম বা উমর ইবনুল খাত্তাবের মধ্যে যাকে আপনার পছন্দ , তাকে ইসলাম গ্রহণের তাওফিক দিয়ে ইসলামের শক্তি দান করুন । হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব ছিলেন আল্লাহর প্রিয় । তিনি তাকে ইসলামের সুশীতল ছায়া তলে আশ্রয় দান করেন । '
হযরত উমর ( রাঃ ) খুবই সাধারণ জীবন যাপন করতেন । তাঁর একাধিক জামা না থাকার কারণে একবার জুম্মার সময়ে তিনি কিছুটা সময় পরে উপস্থিত হয়েছিলেন । হাফেজ জাহাবি রাহ . কাতাদাহ রাহ . হতে উদ্ধৃত করে বলেন , উমর রা . খলিফা নিযুক্ত হওয়ার পর তালিযুক্ত আলখেল্লা পড়ে বাজারে চক্কর দিতেন । তালিগুলোর মধ্যে কিছু ছিলো চামড়ার । তাঁর কাধে থাকতো চাবুক । অপরাধী পেলেই শাস্তি দিতেন । ( তারিখুল খুলাফা ২৬৮ ) কুরাআনের অনেক মতের সঙ্গেই ছিলো হযরত উমর ( রাঃ ) এর মিল । যেমনঃ হযরত উমর ( রাঃ ) মুহাম্মদ ( সাঃ ) - কে বলেছিলেন – হে আল্লাহর রাসুল ! যদি আপনি মাকামে ইবরাহিমকে নামাজের স্থান হিসেবে গ্রহণ করতেন । পরবর্তীতে আল্লাহ অবতীর্ণ করেছিলেনঃ ‘ তোমরা ইবরাহিমের দাঁড়ানোর জায়গাকে নামাজের জায়গা হিসেবে গ্রহণ করো । ' ( সূরা বাকারাঃ ১২৫ )
0 Comments