Header Ads Widget

Responsive Advertisement

কুরবানীর ইতিহাস । পিতার হাতে পুত্র কুরবানী । হযরত ইব্রাহিম আঃ। হযরত ইসমাঈল আঃ। Qurbani.


 আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। 



প্রিয় দর্শক ,,

ইসমাইল আঃ ইবরাহীম আঃ এর অত্যন্ত প্রিয় সন্তান ছিলেন। প্রথমে সন্তান হচ্ছিল না, ইবরাহীম আঃ দোয়া করে যাচ্ছিলেন। অনেক দোয়ার সন্তান ইসমাইল আঃ। নেক সন্তান। পিতার মিশন সফলের জন্য উত্তম উত্তরাধিকারী। তবুও, যখন আল্লাহ বললেন তোমার প্রিয় সন্তানকে জবেহ করো। ইবরাহিম আঃ আদেশ পালনে কোন অলসতা করলেননা।

যখন ইসমাইল আঃ পিতার সাথে চলাফেরা করার বয়সে উপনীত হল,তখন ইবরাহীম তাকে বলল, “বাবা, আমি স্বপ্ন দেখেছি, তোমাকে আমি জবেহ করছি, এখন তোমার অভিমত কি দেখ!” ইসমাইল বলল, বাবা, আপনি আপনার আদেশ পালন করুন। আল্লাহ চাহে তো আপনি আমাকে সবরকারীই পাবেন।এটা ছিলো  আত্মত্যাগের এক জলন্ত দৃষ্টান্ত । 

সুতরাং আমাদেরও, ইসলামের বিধান মানতে যত কষ্টই হোক, সহ্য করতে হবে। ইসলামের জন্য ও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যথাসম্ভব ত্যাগ স্বীকারের চেষ্টা করতে হবে।


প্রিয় দর্শক ,,

আল্লাহ সামর্থ্যবান মুসলমানদের উপর কুরবানী ওয়াজিব করেছেন। তবে আমরা যদি কুরবানী বলতে শুধু পশু-জবাই বুঝি, তাহলে ভুল করবো। কুরবানী শুধুই পশু জবাই নয়। ইসলামের অন্যান্য ইবাদতের মত কুরবানীর মধ্যেও রয়েছে অনেক শিক্ষা। ফলে যেমন আমরা পশু-কুরবানী করার প্রতি গুরুত্ব দেই, তেমনি আমাদের কোরবানির শিক্ষার প্রতিও মনোযোগ দিতে হবে।


কুরবানীর নানা শিক্ষা ও তাৎপর্য রয়েছে, 


১) কুরবানী আমাদের ত্যাগ ও উৎসর্গ শিক্ষা দেয়। আমাদের উপর ইসলামের যে বিধানই আবশ্যক হোক, আমাদের পালন করতে হবে। আল্লাহর রাজি-খুশির জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা চালাতে হবে।


২) কুরবানী আমাদেরকে এছলাহে নিয়ত ও তাকওয়া শিক্ষা দেয়। আসলে নিয়ত ছাড়া সবকিছুই ভালো-খারাপ হতে পারে।নিয়তের গুণেই কাজ ভালো বা খারাপ হয়। আপনি অনেক টাকা দান করলেন, মাদরাসা বানালেন বা শহীদ হলেন, যদি আপনার এর দ্বারা দুনিয়াবি উদ্দেশ্য থাকে তাহলে এগুলো ভালো কাজ হিসেবে গণ্য হবেনা।


অন্যদিকে যদি আপাতদৃষ্টিতে একটা খারাপ কাজেও ভালো নিয়ত থাকে, তাহলে সেটাই ভালো কাজ হিসেবে গণ্য হবে। আল্লাহ কুরবানীর বিষয়ে বলেছেন, আল্লাহ তোমাদের পশুর রক্ত গ্রহণ করবেননা। গোশত গ্রহণ করবেননা। গ্রহণ করবেন তাকওয়া।


গরু বা ছাগল যত বড়ই হোক, সেইটা গ্রহণ করবেননা। গ্রহণ করবেন তাকওয়া, সহি নিয়ত। সুতরাং আমাদেরও প্রতিটি কাজে নিয়ত সহি করতে হবে। কাজ যতই ছোট হোক, অবশ্যই, নিয়ত সহি করতে হবে।


৩) কুরবানী আমাদেরকে শিক্ষা দেয়, শুধু নিজে আল্লাহর বিধান করলে চলবেনা। নিজের অধীনস্তদেরকেও আল্লাহর বিধান মানতে বলতে হবে। তাদেরকে মানতে বাধ্য করতে হবে, অন্যথায় ধর-পাকড় থেকে মুক্তি পাওয়া যাবেনা।


এর থেকে বুঝা যায়, ব্যক্তির ক্ষেত্রে তো বটেই, পারিবারিক ও সামাজিক পর্যায়ের ইসলামি বিধানও পালন করতে হবে।পরিবার ও সমাজকে আল্লাহর বিধানের দাওয়াত দিতে হবে, চাপ প্রয়োগ করতে হবে।সংশয় ছাড়াই।অন্যথায় দায়িত্বশীলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।


৪)কুরবানী আমাদেরকে সাম্য,সামাজিকতা ও আলাপ-আলোচনা করতে শিক্ষা দেয়। আসলে আমরা যেমন বলেছি, ইসলাম ব্যক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, তো, ইসলাম কীভাবে সমাজ পরিচালনা করতে চায়? সমাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে ইসলাম সাম্য, সামাজিকতা ও আলাপ-আলোচনার গুরুত্ব দেয়। কেননা এই সুযোগ না দিলে, পরিণামে,ব্যক্তিতন্ত্র কায়েম হয়।


৫) কুরবানী আমাদেরকে সবর শিক্ষা দেয়। আমরা যদি ত্যাগ স্বীকার করতে চাই, নিয়ত শুদ্ধ করতে চাই বা আমার অধীনস্তের উপর খোদায়ী বিধান প্রয়োগ করতে চাই, তাহলে আমাদেরকে সবর করতে হবে। আমাদের নানা বাঁধা আছে_নাফছানি খাহেশাত, শয়তানে মালউন, দুষ্ট মানুষ, কঠিন পরিবেশ ও প্রতিবেশ, সবই আমাদের সামনে বাঁধার সৃষ্টি করে। এসব বাঁধার সামনে আঁটল থাকার জন্য আমাদের সবর করতে হবে।


প্রিয় সন্তানকে জবাই করার মত ত্যাগ স্বীকার করতে এবং সন্তানকে আল্লাহর আদেশ মানতে রাজী করাতে ইবরাহীম আঃ এরও সবর করতে হয়েছে। ইবরাহীম আঃ সত্যি সত্যি জবেহ করতে উদ্যত না হয়ে,মিছামিছি অভিনয় করতে পারতেন।কিন্তু তিনি অভিনয় করেননি। নিয়তকে খালেস করেছেন,এই যে সবর করেছেন।


আমাদেরও জীবনের সমস্ত ক্ষেত্রে সবর করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।


Post a Comment

0 Comments