আসসালামু আলাইকুম ওরাহমাতুল্লাহ , আশা করি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অশেষ মেহেরবানি ও দয়ায় আপনারা সকলেই ভাল আছেন।
প্রিয় দর্শক,,
স্বপ্ন এক অদ্ভুত বিষয়। মানুষ স্বপ্ন কেন দেখে, কিভাবে দেখে তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা থাকলেও বিজ্ঞানীরা এখনো তা পূরাপুরিভাবে নিশ্চিত নয়। এখনো বিজ্ঞানীরা গবেষণা করেই যাচ্ছেন। কারন বর্তমান ব্যাখ্যা অনুযায়ী কিছু বিষয়ে সঠিক ধারণা দিতে পারলেও কিছু বিষয়ে পারেনা।
বিজ্ঞান বলে যে মানুষ যা ভাবে, মানুষ যে বিষয় নিয়া সব সময় থাকে অথবা নতুন কোন বিষয় মনে রেখাপাত করলে মস্তিষ্ক তার প্রতিক্রিয়া স্বপ্ন হিসাবে রিফ্লেক্ট করে স্বপ্ন দেখায়। কিন্তু এমন কিছু বিষয় যা আগে দেখেনি, কখনো শোনেনি, কখনো কল্পণাও করেনি সেগুলো কিভাবে স্বপ্নে আসে তা নিয়া সন্দিহান।
মানুষ স্বপ্নে সহবাস করা দেখে। এটি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ১৬-২০ বছর বয়সে বেশি দেখে। যদিও তার আগে বা পরেও দেখতে পারে।
বিজ্ঞান ব্যাখ্যা অনুযায়ী ১২, ১৩ এর কাছাকাছি বয়স থেকে ছেলেদের বীর্যপাত শুরু হয়, অর্থাৎ যৌন সাক্ষম হয়। আর মেয়েদের মাসিক বা পিরিয়ড শুরু হয় অর্থাৎ সন্তান ধারণের ক্ষমতা অর্জন করে।
আর এসময় ছেলে ও মেয়ে কিছুটা বুঝেই যায় যে সহবাসের মাধ্যমেই গর্ভধারণ ঘটে। মেয়েদের ক্ষেত্রে তখন ডিম্বাশয় বা ওভারি থেকে ক্ষরিত হরমোন ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করার জন্য মস্তিষ্ককে উদ্বিপিত করে। মস্তিষ্ক তখন পরিবেশ থেকে সঙ্গীর প্রয়োজনীয়তার ক্রিয়া শুরু করে। ফলে ঘুমের মধ্যে মস্তিষ্ক সহবাসের উদ্রেক করে দেয় যাতে ব্যক্তি সহবাসে লিপ্ত হয়। এই স্বপ্নের মাধ্যমে কখনো কখনো শারীরিক উত্তেজনাও আসে যাতে ব্যক্তি তার জন্য আকৃষ্ট হয়।
ছেলেদের ক্ষেত্রে বীর্য অনবরত তৈরি হয় ও নির্দিষ্ট আয়ু শেষে মারা যায় যদি ব্যবহার না হয় তবে।
এসময় বীর্যপাতের জন্য লিঙ্গ দৃঢ় হবার দরকার হয় তা না হলে ক্ষেপননালী বীর্যপাত ঘটাতে পারেনা।।
কিন্তু স্বাভাবিক অবস্থায় লিঙ্গ দৃঢ় হয়না বলে স্বপ্নে সহবাসের উদ্রেক করে যাতে শারীরিক উত্তেজনা আসে এবং লিঙ্গ দৃঢ় হয়। কাজেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বপ্নে সহবাস দেখার জন্য বীর্যপাত হয়ে যায়।
এই ঘটনা দুটি শারীরিক প্রয়োজনে মস্তিষ্ক সৃষ্টি করে। এই স্বপ্নের বিশেষ কোন অর্থ নাই।
তবে, গনকরা বা জ্যোতিষীদের মতে যখন মানুষের খুব কাছে বিয়ের সুযোগের মত ভাগ্য আসতে পারে, তখন মানুষ সহবাস স্বপ্ন দেখে। এক্ষেত্রে দুটি বিষয় থাকে এই স্বপ্ন তাকে সত্যি বিয়ে পর্যন্ত নিয়ে যায় অথবা স্বপ্নের প্রভাবে মানুষ উত্তেজিত হয়ে আকৃষ্ট হয়ে গোপনে সহবাস করতে চাই বা করেন। তাই স্বপ্নটি সতর্ক বার্তা দেয় যে নিজেকে অনৈতিক পথে যাতে নিয়ে না যায়।
কেউ কেউ বলেন যে সহবাস দেখার অর্থ হল ভাগ্য ভাল হওয়া বা টাকা পয়সা পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টির ইঙ্গিত। কারন সহবাসের আনন্দের মত এই সম্পদ মানুষকে খুশি করে থাকে।
স্বপ্নে মৃত্যু আমরা অনেকেই দেখে থাকি। এই স্বপ্ন ভয় ও দুশ্চিন্তা উদ্রেক করলেও তা এড়ানো যায় না। স্বপ্নে কোনও প্রিয়জনের মৃত্যু দেখলে তা মনের ওপর গভীর প্রভাব বিস্তার করে। এই ধরনের স্বপ্নেরও কিন্তু অর্থ রয়েছে। আজ আমরা মৃত্যু সম্পর্কিত স্বপ্নের অর্থ বিশ্লেষণ করব।
সব সময় যে মৃত্যুর স্বপ্ন মানেই খারাপ তা কিন্তু নয়। কারণ মৃত্যুর অর্থ পুরনোর শেষ ও নতুন কিছুর শুরু। তাই স্বপ্নে মৃত্যু দেখা জীবনের নতুন কিছু শুরুর অর্থ বহনকারীও হতে পারে। কোনও খারাপ অভ্যাস বা খারাপ সময়ের শেষ হওয়াও বোঝাতে পারে মৃত্যুর স্বপ্ন। নির্ভর করছে আপনি কার মৃত্যু দেখছেন এবং কী ভাবে মৃত্যু দেখছেন। আমাদের স্বপ্নে দেখা প্রতিটি চরিত্রই আমাদের চরিত্রের কোনও বৈশিষ্ট্য বা জীবনের অধ্যায় চিহ্নিত করে। তাই আগে বুঝতে হবে স্বপ্নে দেখা নির্দিষ্ট মানুষটি আমার জীবনে কোন গুরুত্ব বহন করছে। তবেই তার মৃত্যুর স্বপ্নের অর্থ বোধগম্য হবে। যেমন ধরা যাক, স্বপ্নে কোনও বয়স্ক মানুষের মৃত্যু দেখার অর্থ পুরনো কোনও অভ্যাস ত্যাগের সময় উপস্থিত।
* স্বামী বা স্ত্রীর মৃত্যুর স্বপ্ন দেখলে বুঝতে হবে জীবনসঙ্গীর কাছ থেকে যা চান তা পাচ্ছেন না। সেই অপূর্ণতাই তাঁর মৃত্যদৃশ্য আপনার স্বপ্নে আসছে।
স্বপ্নে ভালো কিংবা খারাপ যা-ই ইঙ্গিত বহন করুক না কেন, যদি এর ব্যাখ্যা ভালো হয়, তবে সে ব্যক্তি স্বপ্নে দেখা অনিষ্টতা থেকে বেঁচে যায়। সুতরাং স্বপ্নের ব্যাখ্যা বা ইঙ্গিত জানার জন্য ভালো, জ্ঞানী ও আল্লাহভিরু লোকদের কাছে যাওয়াই জরুরি।
তাই স্বপ্ন যে রকমই হোক, তা দেখার পর কিছু সাদকা বা দান করে দেয়া উত্তম। কেননা স্বপ্নের ইঙ্গিত যদি খারাপ হয়, তবে এ দানের কারণে তার অনিষ্টতা কেটে যাবে। আবার স্বপ্নের ইঙ্গিত যদি ভালো হয় তবে দান-সাদকার ফলে তার ভালো ইঙ্গিতের শুকরিয়া আদায় হয়ে যাবে।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে স্বপ্নের কথা বলার ক্ষেত্রে আল্লাহওয়ালা, ধর্মভিরু জ্ঞানী লোকদের কাছে বর্ণনা করার তাওফিক দান করুন। স্বপ্ন যে রকমই হোক আল্লাহর রাস্তায় কিছু সম্পদ সাদকা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
0 Comments