আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
সুপ্রিয় দর্শক মন্ডলী আশা করি মহান আল্লাহ সুবহানু তায়ালার অশেষ রহমত ও দয়ায় আপনারা প্রত্যেকেই ভালোআছেন।
বন্ধুরা,,,,
চার ধরনের পাত্র এমন আছে,,,
যে ব্যক্তি এই চার ধরনের পাত্রে খাবার খাবে
বা পান করবে।
অর্থাৎ ওই ধরনের বাটি,,ও থালা বাসনে আহার করবে তার জন্য জান্নাত হারাম হয়ে যাবে।
এবং তার জন্য জান্নাতের গ্লাস ও জান্নাতের থালা-বাসন হারাম হয়ে যাবে।
এবং ওই পাত্রে পানি পান করার কারণেই এবং খাবার গ্রহণ করার কারণেই তার পেটে জাহান্নামের আগুন ধরিয়ে দেওয়া হবে।
প্রিয়দর্শক,,,
এখন আমরা জানবো যে চারজনের পাত্রে খাবার খাওয়া নিষেধ।।
(প্রথমত সর্ণ পাত্র)
হজরত হুজাফা ইবনে ইয়াসান রাদীআল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত,,, আমি রাসূল সাল্লাহু সালাম এর কাছ থেকে শুনেছি,, তিনি বলেছেন,, তোমরা রেশমি কাপড় ও রেশমি বস্ত্র পরিধান করো না।
এবং স্বর্ণ ও রৌপ্যের তৈরি পাত্রে পানি পান করোনা।
এমনকি এসব পাত্রে খাবারও খেয়ো না।
কেননা এগুলো দুনিয়াতে কাফেরদের জন্যে আর জান্নাতে ঈমানদারদের জন্য।
(বুখারি হাদিস নাম্বারঃ 5426)
অর্থাৎ ইসলামে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে।
কিন্তু এটি কেন নিষেধ করা হয়েছে এটি সবারই জানার আগ্রহ।
প্রথমত এটি দ্বারা বান্দার অহংকার
প্রকাশ পায়।
অনেক মানুষেরই সামান্য পরিমাণ সম্পদ ও টাকা পয়সার মালিক হলে তাহলে তাদের অহংকার এর সীমা থাকে না।
তাহলে একবার ভাবুন একজন মানুষ যখন সর্ণের পাত্র ব্যবহার করে,, তাহলে তার মনে কি পরিমান অহংকার রয়েছে।
এটি বলাই বাহুল্য।
মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন,, যারা অহংকার করে তিনি তাদেরকে দেবেন যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
তোমরা তো আল্লাহ ছাড়া আর কোন সাহায্যকারী সমর্থক পাবেনা।
(সূরা নিসা আয়াত 173)
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত,,, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেন,, আল্লাহ তালা বলেছেন,, সম্মান হচ্ছে আল্লাহর পরনের কাপড়।
আর অহংকার হচ্ছে আল্লাহর চাদর।
যে ব্যক্তি এটা নিয়ে আমার সাথে টানাটানি করে আমি তাকে শাস্তি দেই।
( মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ 26২০)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাম আরো বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন অহংকারীদেরকে ছোট ছোট পিপিলিকার ন্যায় মানুষের আকৃতি দিযে হাশরের ময়দানে উপস্থিত করা হবে।
অপমান ও লাঞ্ছনা তাদেরকে চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেলবে।
তাদেরকে জাহান্নামের একটি জেলখানায় একত্রিত করা হবে।
যার নাম হবে বুলাস,,, আগুন তাদেরকে চতুর্দিক থেকে ঘিরে ফেলবে।
জাহান্নামীদের শরীরের ঘাম তাদেরকে পান করতে বাধ্য করা হবে।
(সুনানে তিরমিজি হাদিস নাম্বারঃ 2492)
দ্বিতীয় রৌপ্প পাত্রে,,,
এ বিষয়ে নবী কারীম সাল্লাহু সাল্লাম এর স্ত্রী হযরত ম্মে রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা থেকে বর্ণিত,,,, রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রুপার পাত্রে কোন কিছু পান করে,,, সে যেন তার পেটে টগবগ করা জাহান্নামের আগুন প্রবেশ করায়।
(বুখারি হাদিস নাম্বারঃ 5634)
তিন নাম্বার হল কোন হারাম প্রানি,, বিশেষ কুকুর,, কোন পাত্রে মুখ দিলে সে পাথরটি সাতবার না ধুয়ে সে পাত্রে খাবার খাওয়া নিষেধ।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সালাম বলেছেন,, যদি কোন কুকুর তোমাদের কোন পাত্রের মধ্যে মুখ দেয় তাহলে সেটাকে সাতবার ধুতে হবে।
এবং একবার মাটিদারা মাজতে হবে।
( মুসলিম হাদিস নাম্বারঃ 280 --269 নম্বর হাদীসটিতে মাটি দিয়ে মজার কথা বলা হয়েছে প্রথমবারেই।
এবং 280 নম্বর হাদীসটিতে মাটি দিয়ে মাজার কথা বলা হয়েছে অষ্টমবারে অর্থাৎ 7 বার পানি দিয়ে ধোয়ার পর।
তবে এখানে মূল বিষয় হলো উত্তম ও ভালোভাবে পরিষ্কার করা।
এবং জীবাণুমুক্ত করা,, যেহেতু তখনকার সময়ে সাবান বা ডিটারজেন্ট পাউডার বা কোন ধরনের সাবান লিকুইড ছিলনা।
তখন মাটিই ছিল উত্তম জীবানুনাশক,
এবং পরিষ্কারক।
এছাড়া বিজ্ঞান ও বলেছে যে কুকুর খুব ক্ষতিকর ও বিপজ্জনক জীবাণু বহন করে।
কুকুরের লালা থেকে রোগ শোক হতে পারে।
অর্থাৎ যদি কোন রকমের কুকুরে মুখ দেওয়া কোন খাবার খাওয়া হয়,, বা সে পাত্র উত্তম ভাবে পরিষ্কার করে না খাওয়া হয় তাহলে কুকুরের লালায় যে সমস্ত জীবাণু বহন করে তা থেকে আমরা অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
আবার আমাদের কে মনে রাখতে হবে রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বিনা কারণে কুকুর পালন করে অর্থাৎ স্বীকার করা,, গবাদিপশু পাহারা,, বাড়ি পাহারা,, অথবা শস্য ক্ষেত পাহারা দেওয়ার উদ্দেশ্য ছাড়া যারা ঘরে কুকুর লালন-পালন করে প্রত্যেকদিন ওই ব্যক্তির 2 কিরাত পরিমাণ নেকি হ্রাস পায়।
( মুসলিম হাদিস নাম্বার 1475)
(তিরমিজি হাদিস নাম্বারঃ 1487)
অন্য একটি হাদীসে এসেছে,, এক কিরাত হল উহুপাহাড় সমপরিমাণ।
( হাদিস নাম্বারঃ 4650)
তাই আমরা কেউই আমাদের ঘরের মধ্যে কুকুর পালন করব না।
কুকুরকে সবসময়ই বাহিরে রাখতে হবে।
কিন্তু পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে কুকুরকে ঘরে রাখার,ও পালন করার যে সংস্কৃতি আছে মুসলমান হিসেবে সেটি আমাদেরকে পরিত্যাগ করতে হবে।
অর্থাৎ ঘরের মধ্যে কুকুর পালন করা যাবেনা।
চতুর্থ নাম্বার ভাঙ্গা পাত্র,,
হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত তুল্লাহ সাল্লাহু সাল্লাম,, পাত্রের ভাঙ্গা স্থান দিয়ে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন।
এবং পানির মধ্যে ফুদিতে নিষেধ করেছেন।
(সুনানি আবু দাউদ হাদিস নাম্বারঃ 3722)
আর এটা বিজ্ঞানসম্মত যে গ্লাস বা মগ ও থালা বাসণ ইত্যাদির ভাঙ্গা স্থানে জীবনু সৃষ্টি হয়।
সুতরাং সেখানে মুখ লাগালে মুখের মধ্যে জীবাণু প্রবেশ করে অসুখ-বিসুখ সৃষ্টি হতে পারে।
সাধারণ অবস্থায় খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রে ভালো ও উপযুক্ত এবং পরিচ্ছন্ন পাত্র ব্যবহার করা উচিত,, কেননা ভাঙ্গা আসবাব পত্র ইত্যাদিতে খাবার খাওয়া বা পান করা হলে তা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বা খাবার খাওয়ার সময় হাত-পা-মুখ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বিশেষ করে এজাতীয় পাত্রে মেহমানদের আপ্যায়ন করা কে সমাজের সম্মানহানিকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
অতএব খাবার বা পানাহারের ক্ষেত্রে ভাঙ্গা,, ফুটো ও অনিরাপদ পাত্র ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
আবার আমরা জানি রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম এর কোন কথাই অবৈজ্ঞানিক নয়,,বৈজ্ঞানিক ভাবে লক্ষ করলে দেখা যায় সর্ণ ও রৌপ্পের পাত্র খুব দ্রুত ক্ষয় হয়।
এর কারণেই খাবার বা পানির মাধ্যমে অতি ক্ষুদ্র কণা আমাদের দেহে প্রবেশ করতে পারে।
এবং তা আমাদের রক্তের সাথে মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
এতে আমাদের দেহে নানান জটিলতা দেখা দিতে পারে।
একবার ভেবে দেখুন জিনি সারে চৌদ্দশ বছর আগেই আমাদের বলে গিয়েছেন।
আজকের বিজ্ঞান শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে রয়,, কারণ দুই হাজার বছর আগে ছিল না বিজ্ঞানের
কোন ছিটেফোঁটাও।
তবুও আমাদের রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম সব জানতেন। এবং তা একমাত্র আল্লাহ তালার মাধ্যমে।
এছাড়া ভাঙ্গা পাত্রের ছোট জায়গায় ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণুরা থাকতে পারে।
আর সারে চৌদ্দশ বছর আগের মানুষকে বললে তারা এটার মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতো না।
তাই তাদেরকে এক কথায় বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে এটি নিষেধ।
আর তারা নবীজির এককথায় পাত্রের ভাঙ্গা অংশ দিয়ে খাবার বা পান করত না।
শুধুমাত্র ঈমানের বলে বলিয়ান হয়ে তারা ইসলাম মানতো।
আর তার যৌক্তিক বাস্তবতা আজকের বিজ্ঞানের কল্যাণে আমরা দেখে চলেছি প্রতিনিয়ত।
প্রত্যেক নামাযের পর 10 বার করে সুবহানাল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ এবং আল্লাহু আকবার এটি পাঠকারী এবং ঘুমানোর সময় সুবাহানাল্লাহ তেত্রিশ বার আলহামদুলিল্লাহ্ তেত্রিশ বার আল্লাহু আকবার 34বার করে পাঠকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে।
( ইবনে মাজাহ হাদিস নাম্বারঃ 926)
(আবু দাউদ হাদিস নাম্বার 5065) আল্লাহ সুবহানাতায়ালা আমাদের প্রত্যেকে যেন সুস্থ রাখেন সুন্দর রাখেন নিরাপদে রাখেন এই কামনাই আজকের ভিডিওটি এখানেই সমাপ্তি আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু
তো প্রিয় দর্শক যারা ভিডিওটি শেষ পর্যন্ত দেখেছেন তারা কমেন্টে লিখে জানাবেন।
আল্লাহ সুবহানাতায়ালা আমাদের প্রত্যেককেই যেন সুস্থ রাখেন ভাল রাখেন। নিরাপদে রাখেন। এই কামনাই আজকের ভিডিওটির এখানেই সমাপ্তি। আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু
0 Comments