Header Ads Widget

Responsive Advertisement

স্ত্রীকে ৬টি নামে ডাকলে আল্লাহ খুশি হন | জান পাখি সুইটহার্ট বলে ডাকা যাবে কি !

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। 

প্রিয় দর্শক ,,




আজকে আমরা জানবো স্ত্রীকে যে ছয় নামে ডাকলে আল্লাহ খুশি হন সে সম্পর্কে।

এই এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আমাদের আগে জানা দরকার বিশ্বনবী (সা.) তাঁর প্রাণ প্রিয় স্ত্রীদের কি নামে ডাকতেন। তাহলেই আমরা আমাদের প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবো। আমাদের সমাজে স্ত্রীদেরকে অনেকেই সন্তানদের মা নামে ডাকাটাই প্রচলিত।


যেমনঃ সুরাইয়ার মা, ফারজানার আম্মু ইত্যাদি। যদিও এই ডাকগুলোতে বিশেষ কোনো অসুবিধা নেই,কিন্তু আপনি এগুলোকে আদর্শ ডাকও বলতে পারবেন না।


ইসলাম অনুযায়ী আদর্শ ডাক সেটাই যেটা রাসুল (সা.) তাঁর স্ত্রীদের ডাকতেন। বিভিন্ন সহিহ হাদিস পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে যাচাই বাছাই করে যা বোঝা যায় তা হলো -আপনার স্ত্রীকে আপনি আপনার ইচ্ছামতো যেকোনো নামেই ডাকতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে,সেই নামটি যেন শিরক মুক্ত  হয়। অর্থাৎ আপনি যদি আপনার স্ত্রীকে জান,পাখি,সাথী আদর করে ভালোবাসা সম্বোধন করতে গিয়ে এ সকল ইত্যাদি নামে ডাকা হয়ে থাকে, এতে কোনো অসুবিধা নেই । এটা সম্পূর্ণ রূপে জায়েজ এবং ইসলাম সম্মত। কিন্তু আপনি আপনার স্ত্রীকে এমন কোনো নামে ডাকতে পারবেন না যার মাধ্যমে তাকে আল্লাহর সাথে শিরক করা হচ্ছে।


রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তাঁর বিবিদের কি নামে ডাকতেন?


রাসূলুল্লাহ (সা.) আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) কে ছয়টি নামে ডাকতেন। এরমাঝেঃ-


প্রথমটি হলো আ'য়েশ। অর্থাৎ রাসুল (সা.) ভালোবেসে আয়েশা (রা.) এর নাম থেকে'আ'-কার বাদ দিয়ে সেটিকে সংক্ষিপ্ত করে ডাকতেন।


দ্বিতীয় যে নামে রাসুল (সা.) আয়েশা (রা.) কে ডাকতেন, সেটি হলো 'হুমায়রা'। হুমায়রা মূলত লাল রঙের একটি পাখির নাম।

এটি অত্যান্ত রূপবান এবং সৌন্দর্যমন্ডিত একটি পাখি। নবীজি (সা.) তাঁর স্ত্রীকে হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে গভীর ভালবাসার সহিত এই নামটি বলে ডাকতেন।


তৃতীয়ত আল্লাহর নবী (সা.) আয়েশা (রা.) কে ইবনাতুস সিদ্দিক বা বিনতুস সিদ্দিক নামেও ডাকতেন।এবং বিনতে আবি বকর নামেও ডাকতেন। এই নাম দুটির অর্থ হলো আবু বকর এর মেয়ে । তৃতীয় এবং চতুর্থ নামগুলো দ্বারা এই নাম দুটির অর্থ হলো সিদ্দিকের মেয়ে।


চতুর্থতঃ রাসুল (সা.) আয়েশা (রা.) কে ইবনাতু আবি বকর নামেও ডাকতেন। নবিজী (সা.) মূলত আয়েশা (রা.) এর পিতা হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) কেই ইঙ্গিত করতেন।আমরা বর্তমানে যেমন বলি অমুকের মেয়ে, তমুকের মেয়ে;

এই নামগুলোর দ্বারা রাসুল (সা.) এভাবেই তাঁর স্ত্রীকে ভালোবেসে, আদর আদর করে কখনো কখনো সিদ্দিকের মেয়ে। মাঝে মাঝে আবু বকরের মেয়ে বলে ডাকতেন।

পঞ্চমঃ যে নামে রাসুল (সা.) আয়েশা (রা.) কে ডাকতেন, সেটি হলো 'মুওয়াফফাকাহ'। এই নামের অর্থটিও কিন্তু অত্যন্ত সুন্দর!এই নামের অর্থ আল্লাহর পক্ষ থেকে তওফিক প্রাপ্তা ৷

ষষ্ঠ নামটি হলো ঃ'উম্মে আব্দুল্লাহ' অর্থাৎ আব্দুল্লাহর মা। যদিও আয়েশা (রা.) এর কোনো সন্তান ছিলনা, তাও রাসুল (সা.) তাঁকে ভালোবেসে আবদুল্লাহর মা বলে ডাকতেন ।আাব্দুল্লাহ এমন একটি নাম যাকে আল্লাহর গোলাম বলা যেতে পারে



এখন আমাদের অনেকের মনেই প্রম্ন জাগে, স্ত্রীকে জান পাখি সুইটহার্ট বলে ডাকা যাবে কি না??

আমাদের অজানা নয় যে, গভীর ভালোবাসা ও প্রেমের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে এ জাতীয় শব্দগুলো ব্যবহার করা হয়। সুতরাং স্ত্রীর উদ্দেশ্যে এগুলো ব্যবহারে কোন অসুবিধা নেই ইনশাআল্লাহ। অনুরূপভাবে যে সকল নাম, শব্দ বা প্রশংসা মূলক বাক্য শুনলে স্ত্রী খুশি হয় তার উদ্দেশ্যে সেগুলো ব্যবহার করতেও কোন আপত্তি নাই বরং উত্তম যদি তাতে শরিয়া বিরোধী কোনও কিছু না থাকে।

নি:সন্দেহে প্রেম পূর্ণ ও আদর মাখা সম্বোধন দাম্পত্য জীবনে ভালবাসা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ এবং স্ত্রীর সাথে ‘সুন্দর আচরণ ও সদ্ভাবে জীবন-যাপন’ এর অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ

“আর তোমরা স্ত্রীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর।” (সূরা নিসা: ১৯)


অর্থাৎ এই আলোচনার থেকে আমরা বুঝতে পারলাম যে,আপনি আপনার স্ত্রীকে ভালোবেসে যেকোনো নামেই ডাকতে পারেন।তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন সেটি ইসলাম পরিপন্থী না হয়,


সেই নামের দ্বারা যেন শিরক না হয়।এই বিষয়গুলো মাথায় রাখলেই স্ত্রীকে ভালোবেসে ডাকার ক্ষেত্রে আর কোনো বাঁধা থাকবেনা।সকল ভাইদের প্রতি অনুরোধ রইলো, আপনারা সুন্নাহ অনুযায়ী স্ত্রীদের সাথে উত্তম আচরণ করুন, তাদের ভালোবাসুন।দেখবেন এতে করে পরিবারটা খুব সুন্দর হবে। আর সেই সুন্দর পরিবারে বেড়ে ওঠা সন্তানেরাও মানুষের মত মানুষ হয়ে উঠবে। ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলা আমাদের সকলের পরিবার সুখে-শান্তিতে ভরিয়ে তুলুক, আমিন।


Post a Comment

0 Comments